সরেজমিন: ঘুরে দেখছেন প্রতিনিধিরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
এ বার আশ্রম এলাকা, বিশেষ করে উপাসনা গৃহ ও ছাতিমতলা সংস্কারে উদ্যোগী হলেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন।
গত ২৭ জানুয়ারি কার্যকাল শেষ হয়েছিল বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপনকুমার দত্তের। তারপর এক সপ্তাহ উপাচার্য না থাকায় বিশ্বভারতীর প্রশাসনিক কাজ কার্যত শিকেয় উঠেছিল বলে অভিযোগ। গত শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশে বিশ্বভারতীর উদ্ভাবনী শিক্ষা ও গ্রামীণ পুনর্গঠন দফতরের ডিরেক্টর তথা বিনয়ভবনের অধ্যক্ষ সবুজকলি সেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, জমে যাওয়া কাজ শেষ করেই তিনি আশ্রম এলাকা সংস্কারে উদ্যোগী হলেন।
শান্তিনিকেতনে উপাসনা গৃহ প্রতিষ্ঠা করেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জ্যেষ্ঠ পুত্র দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৮৯২ সালে এই মন্দিরের উদ্বোধন হয়। তখন থেকেই ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রতি বুধবার সকালে এখানে উপাসনা হয়। এই উপাসনা বিশেষ কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নয়, বরং জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যে কেউ উপাসনায় যোগ দিতে পারেন। উপাসনা গৃহটি রঙিন কাঁচ দিয়ে নান্দনিক নকশায় তৈরি। তাই স্থানীয় মানুষ ও ছাত্রছাত্রীরা ‘কাঁচমন্দির’ও বলে থাকেন। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই ঐতিহ্যময় এই উপাসনা গৃহের চারপাশের রাস্তা কী ভাবে পরিষ্কার রাখা যায়, সে বিষয়ে জোর দিয়েছেন সবুজকলি সেন। এ ছাড়াও আশ্রম এলাকার কোথাও কোথাও পাঁচিলে অল্প ফাটল ধরেছে। কোথাও হয়তো একটু রং করার প্রয়োজন রয়েছে। সেগুলোই এ বার মেরামতি করা হবে।
বছরভরই পর্যটকের ভিড় থাকে শান্তিনিকেতনে। স্থানীয়দের একাংশের মতে, এই অবস্থায় আশ্রম এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব কিছুটা হলেও তাঁদের উপর বর্তায়। এলাকায় ডাস্টবিনও রয়েছে বিভিন্ন অংশে। তাই যেখানে সেখানে আবর্জনা না ফেলে ডাস্টবিন ব্যবহারের জন্য পর্যটকদের সচেতন করতে পারলেই অনেকটা কাজ হবে বলে মনে করছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের কথায়, ‘‘উপাসনা গৃহের ভিতরের অংশ ঠিকঠাক রয়েছে। তবে আশেপাশের রাস্তা ও জায়গাগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করা দরকার। কী ভাবে সেটা করা যায়, তার জন্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
এই উদ্যোগে খুশি বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রীরাও। তাঁরা বলছেন, ‘‘আমাদের কাছে বিশ্বভারতী শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়। আবেগ ও ভালবাসার জায়গা। এমন পরিকল্পনা খুব দরকার ছিল।’’ এমন উদ্যোগে তাঁরাও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিক তথা বিশ্বভারতীর সংস্কৃত, পালি ও প্রাকৃত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা কল্পিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আশ্রম এলাকা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। তাই উপাচার্যের এমন উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy