Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সুচগুলি ফুটিয়েছে পুত্রবধূ, দাবি সনাতনের

কেন হিংসা বা কোন পুত্রবধূ সে কাজ করেছেন—সে সব প্রশ্নের জবাব সনাতন দেয়নি। তবে পুরুলিয়া ছেড়ে সে পালাল কেন জানতে চাওয়া হলে এই অবসরপ্রাপ্ত হোমগার্ড বলে, ‘‘কোথাও পালাইনি।

অভিযুক্ত: আদালতে তোলার আগে সনাতন।

অভিযুক্ত: আদালতে তোলার আগে সনাতন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৯:৪০
Share: Save:

হিংসে করে পুত্রবধূ তার সৎ-মেয়ের শরীরে সুচ ঢুকিয়ে দিয়েছিল বলে দাবি করল পুরুলিয়ার সুচ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সনাতন গোস্বামী (ঠাকুর)। তবে তার দুই পুত্রবধূর মধ্যে কোন জন ওই কাজ করেছেন, তা ভাঙেনি সে। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পুত্রবধূরা। বুধবার পুরুলিয়ার বিশেষ আদালত সনাতনকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

পুরুলিয়া মফস্‌সল থানার নদিয়াড়ার বাসিন্দা বাষট্টি বছরের সনাতনের বাড়িতে থাকা সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরেই জানা যায়, তার উপরে যৌন-নির্যাতন হয়েছে। অস্ত্রোপচার করে তার শরীর থেকে সাতটি সুচ বার করা হয়। ২১ জুলাই কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যায় নির্যাতিতা শিশুটি। মেয়েটির মা-কে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত সনাতন পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। শনিবার উত্তরপ্রদেশের রেণুকূট থানার পিপড়িতে ধরা পড়ে সে। পুরুলিয়া পুলিশের দল মঙ্গলবার রাতে সনাতনকে নিয়ে ট্রেনে আসানসোল স্টেশনে পৌঁছয়। সেখানে সাংবাদিকদের কাছে সনাতন দাবি করে, নির্যাতিতার মা-কে সে বিয়ে করেছে। বলে, ‘‘হিংসায় ব্যাটার বৌ মেয়েটার গায়ে সুচ ঢুকিয়েছিল।’’

আরও পড়ুন: লালুর পর নিশানায় মমতাই

কেন হিংসা বা কোন পুত্রবধূ সে কাজ করেছেন—সে সব প্রশ্নের জবাব সনাতন দেয়নি। তবে পুরুলিয়া ছেড়ে সে পালাল কেন জানতে চাওয়া হলে এই অবসরপ্রাপ্ত হোমগার্ড বলে, ‘‘কোথাও পালাইনি। ব্যক্তিগত কাজে বাইরে গিয়েছিলাম। আমি নির্দোষ।’’ সনাতনের হাবভাব দেখে কিছুটা অবাক পুলিশের একাংশও। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘লোকটার মধ্যে কোনও শোকতাপ নেই। ট্রেনে পুলিশকর্মীদের কীর্তন, ভজন শুনিয়েছে!’’ সনাতনের ফাঁসির দাবিতে এ দিন আদালত চত্বরে বিজেপি-র ‘মহিলা মোর্চা’র সদস্যেরা এবং কিছু বাসিন্দা বিক্ষোভ দেখান।

শ্বশুরের দাবি শুনে এ দিন ফুঁসে ওঠেন সনাতনের দুই পুত্রবধূ—রিঙ্কি ঠাকুর ও রিনা ঠাকুর। তাঁদের বক্তব্য, স্বামীদের কাজের সূত্রে তাঁরা দু’জনেই দীর্ঘদিন নদিয়াড়ার বাইরে থাকেন। সম্প্রতি দেশের বাড়িতে এসেছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘গ্রামের বাড়িতে ফিরে বাচ্চাটাকে অসুস্থ দেখে আমরাই জোর করে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। তাতেই সব ফাঁস হয়। সেই রাগেই শ্বশুর এখন মিথ্যা বলছেন।’’

পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস জানান, সনাতনকে জেরা করে ঘটনা সম্পর্কে বিশদে জানার চেষ্টা চলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE