ভিড়ে থইথই সৈকত। শনিবার দিঘায়। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই তৃণমূলের পতাকা লাগানো একের পর এক গাড়ি ঢুকতে শুরু করল দিঘা এবং মন্দারমণিতে। কী ব্যাপার? খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ওই দিন ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের সভা শেষ হতে অনেকেই বাড়ি না ফিরে সোজা চলে এলেন সমুদ্র সৈকতে। সপ্তাহের শেষটায় একেবারে ছুটি কাটিয়ে বাড়ি ফিরবেন।
সপ্তাহ শেষের ছুটিতে এমনিতেই উপকূলের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে ভাল ভিড় হয়। এ সপ্তাহে ঢল নেমেছে। ভিড় সামলাতে ঘাম ছুটেছে দিঘার হোটেল, লজের ব্যবসায়ীদের। অনেকেই ঠাঁই না পেয়ে রাস্তায় থেকেছেন। অনেকে গাদাগাদি করে একটা ঘরেই রাত কাটিয়েছেন। ওল্ড দিঘার একটি অভিজাত হোটেলের মালিক গিরীশচন্দ্র রাউত বললেন, ‘‘এমনিতেই হোটেলে অনেক ঘর অগ্রিম বুকিং হয়ে ছিল। শুক্রবার তৃণমূলের সভা ফেরত লোকজন আসায় এক-একটা ঘরে পাঁচ-সাত জন করে থেকেছেন।’’
তৃণমূল কর্মীরা বিভিন্ন জেলা থেকেই এসেছেন। তবে মুর্শিদাবাদ ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে বেশি লোক এসেছেন বলে হোটেল মালিকেরা জানাচ্ছেন। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির তৃণমূল কর্মী সাইদুল ইসলাম দিঘা থেকে বলেন, ‘‘কলকাতা থেকে ২৫০ কিলোমিটার উত্তরে থাকি। হুট বললেই তো দিঘা যেতে পারি না। সভা শেষ হতে তাই ভাবলাম, এতটা দূরে এলাম যখন এক বার সমুদ্র দেখেই যাই।’’ ডোমকলের ধুলাউড়ির তৃণমূল নেতা ইনসুর আলিও দিঘায়। তাঁর কথায়, ‘‘শুনেছিলাম মুখ্যমন্ত্রী দিঘাকে দারুণ ভাবে সাজিয়েছেন। এখানে না এলে উন্নয়ন বুঝতে পারতাম না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রানিনগরের এক তৃণমূল কর্মী আবার রাখঢাক না করেই বলেন, ‘‘দলের শহিদ দিবস পালন করে বেড়াতে আসাটা একটু দৃষ্টিকটু। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের ধকল, তার পর শহিদ দিবসে কর্মীদের আনতে কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি। তাই সমুদ্রের হাওয়া খেয়ে শরীর-মন চাঙ্গা করছি।’’
দিঘার দোকানি ও ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তৃণমূলের পতাকা বা ‘দিদির দূত’ স্টিকার সাঁটানো অনেক গাড়ি শুক্রবার সন্ধ্যার পরে ঢুকেছে। শনিবার সকাল থেকে ট্রেনে, বাসে ও ব্যক্তিগত গাড়িতে অনেক পর্যটকও এসেছেন। ঘর পেতে নাকাল হয়েছেন অনেকে। উত্তর ২৪ পরগনার সুভাষগ্রাম থেকে সপরিবার আসা বিপুল মঙ্গল বলেন, ‘‘ট্রেন থেকে নেমে এক ঘণ্টার বেশি ঘর খুঁজেছি। কোথাও পাইনি।’’ অনেকে প্রতীক্ষালয়ে আশ্রয় নেন। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী মানছেন, ‘‘সভা ফেরত তৃণমূলের অনেকে এ বারে দিঘা বেড়াতে এসেছেন। হঠাৎ ভিড় বেড়ে যাওয়ায় শনিবার দুপুরের পরে কোথাও হোটেলের ঘর ফাঁকা ছিল না।’’ গত দু’-তিন দিন ধরে বঙ্গোপসাগর অশান্ত। সমুদ্র স্নানে তাই পর্যটকদের সতর্ক করছেন নুলিয়া ও কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy