দুই মন্ত্রীর ঝগড়া। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চেই বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। প্রকাশ্য অনুষ্ঠানের মঞ্চে তর্কাতর্কি করলেন দুই মন্ত্রী, সরকারি আধিকারিকদের সামনেই চলল দোষারোপ পাল্টা দোষারোপের পালা। পরিস্থিতি দেখে সরকারি মঞ্চ থেকে নেমে চলে যান জেলাশাসক সহ আধিকারিকদের একাংশ।
বৃহস্পতিবার মালদহ কলেজের অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে জেলার ১২০ জনকে পাট্টা বিলির কথা ছিল। সাবিত্রী মিত্রের দফতরের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুও। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হলেও কৃষ্ণেন্দু আসেন পৌনে একটা নাগাদ। মঞ্চে উঠে তিনি জানতে পারেন পাট্টা প্রাপকদের মধ্যে ইংরেজবাজারের কয়েকজনও রয়েছেন। এরপরেই তিনি মঞ্চের একপাশে দাঁড়ানো আধিকারিকদের দিকে তাকিয়ে জানতে চান, কে এই পাট্টা বিলির তালিকা তৈরি করেছে? ইংরেজবাজারের বিধায়ক এবং পুরসভার চেয়ারম্যান হওয়ার পরেও কেন তাঁকে তালিকা তৈরির সময় জানানো হয়নি? কৃষ্ণেন্দুবাবু অভিযোগ করেন, তিনি শুনেছেন ইংরেজবাজারে কিছু যুবক পাট্টা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছে। সে কারণে পাট্টা বিলিতে অনিয়ম রয়েছে বলেও সরকারি মঞ্চে অভিযোগ করেন কৃষ্ণেন্দু। অনিয়মের অভিযোগ তুলে তিনি সরকারি আধিকারিকদের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন, ‘‘হু মেক ইট? কে তালিকা তৈরি করল? কে পাট্টা দিল?’’ পাশেই বসে ছিলেন দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, তিনি উত্তর দেন, ‘‘সিএম দিয়েছেন।’’ উত্তর শুনে আরও খেপে যান কৃষ্ণেন্দুবাবু। সরকারি আধিকারিকরা তাঁকে শান্ত করতে এলে তিনি ধমকে বলতেই থাকেন, ‘‘আমি বিধায়ক। আমি মন্ত্রী। আমি জানি না। আমার এলাকায় কে পাট্টা দিয়েছে? কে তালিকা তৈরি করল?’’ এবার সাবিত্রী মিত্র উত্তর দিয়ে বলেন, ‘‘তোমাকে (কৃষ্ণেন্দু) জানানো হয়েছিল। তুমি তো চিঠি দিয়েছো।’’ কৃষ্ণেন্দুর জবাব, ‘‘না আমি জানি না। আপনি আমাকে চিঠি দিয়েছেন, তার উত্তরে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কিন্তু পাট্টার তালিকা জানি না।’’ সাবিত্রীদেবী দাবি করেন, ‘‘সব জেনেও না জানার ভান করছ। পাট্টা বিলিতে কোনও অনিয়ম নেই।’’
আধিকারিকরা কৃষ্ণেন্দুবাবুকে বুঝিয়ে মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনেন। সে সময় কৃষ্ণেন্দুবাবু মোবাইল বের করে কাউকে ফোন করার চেষ্টাও করেন। কৃষ্ণেন্দুবাবু দাবি করেন, পাট্টা বিলির প্রক্রিয়ায় অনিয়ম থাকায় ইংরেজবাজারের কাউকে পাট্টা বিলি করা যাবে না। প্রথমে তা মানতে চাননি সাবিত্রী দেবী। পরে অবশ্য ইংরেজবাজারের কাউকে পাট্টা বিলি করা হয়নি।
মালদহে গত লোকসভা ভোটের প্রচার সেরে ফেরার সময় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলমন্ত্রী সকলের সামনেই কৃষ্ণেন্দু-সাবিত্রী সহ জেলার নেতাদের ডেকে নিজেদের মধ্যে বিবাদ না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে নির্দেশের পরেও মালদহের তৃণমূলের দুই মন্ত্রীর সম্পর্কে যে এতটুকু পরিবর্তন ঘটেনি এ দিনের ঘটনাই তা প্রমাণ করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy