Advertisement
১৭ মে ২০২৪
West Bengal Lockdown

স্বাস্থ্য-বিধি জরুরি ত্রাণেও, ক্লিন্টনকেও বুঝিয়েছেন তিনি

সুপার সাইক্লোনের পরে ওড়িশা, বানভাসি বনগাঁ, সুনামি-ধ্বস্ত আন্দামান, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নেপাল— ত্রাণের কাজে সর্বত্র ছুটেছেন শান্তিরঞ্জন।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই চলছে খাদ্যবন্টন।— পিটিআই-এর প্রতীকী ছবি।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই চলছে খাদ্যবন্টন।— পিটিআই-এর প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৫৫
Share: Save:

বিদেশের চাকরি ছেড়ে ফিরেছিলেন অন্য স্বপ্ন নিয়ে। দুঃস্থদের সেবায় শুরু করেছিলেন নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু প্রচারের আলো থেকে দূরেই থাকতে চান হাওড়ার শান্তিরঞ্জন কাঁড়ার। বলেন, ‘‘নীরবে মানুষের সেবা করলে কাউকে বলতে হয় না।’’

সুপার সাইক্লোনের পরে ওড়িশা, বানভাসি বনগাঁ, সুনামি-ধ্বস্ত আন্দামান, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নেপাল— ত্রাণের কাজে সর্বত্র ছুটেছেন শান্তিরঞ্জন। মন্দা-গৃহযুদ্ধে জর্জরিত সুদানেও গিয়েছেন দলবল নিয়ে। আর এখন লকডাউনের সময়ে হাওড়ার উদনারায়ণপুর ও আমতার প্রায় সাতশো পরিবারের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে তাঁর সংস্থা। লকডাউন-বিধি বজায় রাখতে নিজেদের মধ্যে জরুরি আলোচনা ফোনেই সারছে গোটা টিম। তবে ভবিষ্যতে কী ভাবে আরও বড় পরিসরে কাজটা করা যায়, সেই পরিকল্পনাও সেরে রাখছেন প্রৌঢ় শান্তিরঞ্জন।

উদয়নারায়ণপুরের সোনাতলায় জন্ম শান্তিরঞ্জনের। সেখানেই স্কুল, আমতা কলেজ থেকে স্নাতক। সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর পাশ করে কানাডা পাড়ি, সে দেশেরই একটি সংবাদমাধ্যমে যোগদান। চাকরি করার সময়েই এক যাজক বন্ধুর সংস্পর্শ তাঁর জীবন-দর্শন পাল্টে দেয়। ফেরেন নিজের গ্রামে। কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে তৈরি করেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। ক্রমে সেটি রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতিও পায়।

আরও পড়ুন: রোজা শুরুর আগেই ভাগের আলু পৌঁছে দিলেন হোমে

কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি বৈঠকে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন শান্তিরঞ্জন। সেখানে বিল ক্লিন্টনও এসেছিলেন তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ক্লিন্টন ফাউন্ডেশন’-এর সহকর্মীদের নিয়ে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপ হয় শান্তিরঞ্জনের। পরে ঘনিষ্ঠ হয়েছে সম্পর্ক। এখন পরস্পরের সংস্থার কাজ বা ব্যক্তিগত কাজের সূত্রে ভিডিয়ো কল, ই-মেল বা চিঠি মারফত ক্লিন্টনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে শান্তিরঞ্জনের।

করোনা-বিধ্বস্ত আমেরিকায় দুঃস্থদের কাছে রান্না-করা খাবার পৌঁছে দিচ্ছে ক্লিন্টন ফাউন্ডেশন। তবে শান্তিরঞ্জন সম্প্রতি তাঁদের জানান, এক জায়গায় বহু মানুষ মিলে খাবার রান্না এবং তা পৌঁছনোর কাজ করলে পারস্পরিক দূরত্বের বিধি মেনে চলা মুশকিল। হাওড়ায় তাঁরা কী ভাবে পারস্পরিক দূরত্ব মেনে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী টেবিলের উপরে রেখে সেগুলি মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছেন, ছবির মাধ্যমে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে তা বুঝিয়েছেন তিনি। তবে এই ‘ব্যক্তিগত কথোপকথন’ নিয়ে শান্তিরঞ্জন আর ভেঙে বলতে চান না।

আরও পড়ুন: সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা নাইসেডে

নর্দাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়, রয়্যাল হলোওয়ে (লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়) এবং লেস্টারের ডে মন্টফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সামাজিক কর্তব্যের পাঠ দিতে মার্চে ব্রিটেনে যাওয়ার কথা ছিল শান্তিরঞ্জনের। বাদ সাধে করোনার প্রকোপ। তবে ভিডিয়ো-কলে বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের সঙ্গে মত-বিনিময় চলছে তাঁর।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE