সে দিনের সেই হামলা। ছবি: এএফপি।
পুলিশ কম। তাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অন্যতম ফটক থেকে সশস্ত্র দুই পুলিশকে সরানো হয়েছিল। সে জন্যই হামলাকারী খালিদ মাসুদ রেলিংয়ে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মারার পরে ওই ফটক দিয়ে ঢুকতে পেরেছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এ বার গোটা পার্লামেন্টের নিরাপত্তা ঢেলে সাজার কথা ভাবছে সরকার।
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ঘিরে ইস্পাতের বেড়া আছে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, সেই বেড়ায় একমাত্র বড় ফাঁকটাকেই বেছে নিয়েছিল খালিদ। সেটা হল অন্যতম ফটক বা ‘ক্যারেজ গেট’। ওই ফটক দিয়েই পার্লামেন্টে ঢোকেন প্রধানমন্ত্রী-সহ সব এমপি-রা। পার্লামেন্টে আসা ক্যুরিয়ারের লোকজনও ওই ফটক দিয়েই ঢোকেন। আগে ওই ফটকে দু’জন সশস্ত্র রক্ষী মোতায়েন থাকতেন। কিন্তু পুলিশ কম থাকায় দু’জন নিরস্ত্র রক্ষীকে ‘ক্যারেজ গেট’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের সাহায্য করে পুলিশের একটি সশস্ত্র মোবাইল ইউনিট।
কিন্তু ঘটনার সময়ে মোবাইল ইউনিটের সদস্যরা ‘ক্যারেজ গেট’-এ ছিলেন না। ফলে পার্লামেন্ট চত্বরে ঢুকে পুলিশকর্মী কিথ পামারকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে পেরেছে খালিদ। তাকে গুলি করেন প্রতিরক্ষাসচিব মাইকেল ফ্যালনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ অফিসার। ওই অফিসারদের সেখানে থাকাটা একেবারেই কাকতালীয়। তাঁরা না থাকলে একেবারে পার্লামেন্টের ভিতরেও ঢুকে যেতে পারত মাসুদ।
আরও পড়ুন: আমেরিকায় নাইট ক্লাবে দুই বন্দুকবাজের হানা! হত ১, জখম অন্তত ৩০
ঘটনার পরে ‘ক্যারেজ গেট’-এ ফের সশস্ত্র রক্ষী রাখার কথা ভাবছে টেরেসা মে সরকার। অথবা ওই ফটক একেবারে বন্ধ করে দেওয়াও হতে পারে। তার বদলে ব্যবহার করা হতে পারে ‘ব্ল্যাক রড’স এন্ট্রান্স’। ওই পথ দিয়ে এখন কেবল পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্যরা যাতায়াত করেন। পাশাপাশি পার্লামেন্টের মধ্যে বৈদ্যুতিন দরজা বসানোর কথাও ভাবছে সরকার।
লন্ডনের হামলা ফের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বনাম জাতীয় নিরাপত্তার বিতর্কও উস্কে দিয়েছে। পার্লামেন্টের রেলিংয়ে গাড়ি নিয়ে ধাক্কা মারার ঠিক আগেই মাসুদ কাউকে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠিয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। কিন্তু সাঙ্কেতিক বার্তা বা এনক্রিপশনে ঢাকা হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার নাগাল এখনও পাননি ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। স্বরাষ্ট্রসচিব অ্যাম্বার রাডের দাবি, ‘‘প্রয়োজনে হোয়াটসঅ্যাপের নাগাল পেতে হবে। জঙ্গিরা গোপনে ছক কষতে পারে, এটা ভাবলেই অস্বস্তি হয়।’’ কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেসবুক এখনও এতে রাজি হওয়ার লক্ষণ দেখায়নি। ফলে বিষয়টি নিয়ে ফের সরকার ও তথ্য প্রযুক্তি মহলের দ্বৈরথের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy