Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Pakistan India

Viral: ১২ বছর ধরে ৯০ ডিগ্রি কাত হওয়া ঘাড়, বিনামূল্যে সোজা করলেন চিকিৎসক

রোগী পাকিস্তানের। তাঁকে নিয়ে খবর করেছিলেন এক ব্রিটেনের সাংবাদিক। আর তাঁকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুললেন ভারতীয় চিকিৎসক।

আফসিন গুল।

আফসিন গুল। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২২ ২০:০০
Share: Save:

১৩ বছরের আফসিন গুল কতদিন বাঁচবে, বা আদৌ বাঁচবে কি না— তা তার পরিবার জানত না। ছোট বেলায় দিদির কোল থেকে পড়ে গিয়ে ৯০ ডিগ্রি কোনে ঘাড় কাত হয়ে গিয়েছিল ১০ মাসের আফসিনের। গত ১২ বছরে সেই ঘাড় সোজা হয়নি আর। ফলে স্কুল যাওয়া বা পড়াশোনা করার মতো আর যা যা তাঁর বয়সি মেয়েরা করে থাকে, তার কোনও কিছুই করা হয়নি আফসিনের। সম্প্রতি একটি ঘটনা রাতারাতি জীবন বদলে দিল বছর ১৩-র কিশোরীর।

বাঁকা ঘাড়ের যন্ত্রণা আর অন্যান্য নানা সমস্যা সহ্য করতে করতেই শিশু আফসিন বালিকা থেকে কিশোরী হয়েছে। বিরল রোগের বহু চিকিৎসা করিয়েছিল পরিবার। প্রতিকার হয়নি। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারটি মেয়ের চিকিৎসায় বেশি খরচ করতেও পারেনি আর।শেষটায় সুস্থ হওয়ার আশা মেয়ের ভাগ্যের উপরেই ছেড়ে দেন বাবা-মা। তবে আফসিনের ভাগ্য সদয় হল। আর হল কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই। সম্প্রতি এক চিকিৎসক নিজে আফসিনকে সুস্থ করে তোলার প্রস্তাব দেন। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

আফসিন পাকিস্তানের কন্যা। আর তাঁকে সারিয়ে তোলার প্রস্তাব যিনি দিয়েছিলেন তিনি ভারতীয় চিকিৎসক। নাম ডা. রাজাগোপালন কৃষ্ণণ। আফসিনের বিষয়ে তিনি জানতে পারেন এক ব্রিটিশ সাংবাদিকের রিপোর্ট পড়ে। কৃষ্ণণ জানিয়েছেন, আফসিনের ওই দুর্ঘটনায় ঘাড় বেঁকে যাওয়ার পাশাপাশি সেরিব্রাল পালসিও ছিল। যা তাকে ঠিক হতে দিচ্ছিল না। চিকিৎসা দুনিয়ায় এমন ঘটনা আগে কখনও হয়নি। তার পরও আফসিনকে ঠিক করার চ্যালেঞ্জ নেন কৃষ্ণণ।

আফসিনের পরিবার জানিয়েছে, তাঁদের শুধু পয়সা জুটিয়ে পাকিস্তান থেকে দিল্লিতে আসতে হয়েছিল। অবশ্য তার জন্যও একটি অনলাইন ফান্ডিংয়ের সাহায্য নিতে হয়েছিল আফসিনের পরিবাররে। ভারতে আসার অর্থ ব্যয় করার ক্ষমতাও ছিল না তাদের। আফসিনের ভাই বলেছেন, চিকিৎসক আমাদের বলেছিলেন ঘাড়ের অস্ত্রোপচার হওয়ার আগে চারটি অস্ত্রোপচার হবে আফসিনের। সেগুলো হওয়ার পর মূল অস্ত্রোপচারটি হয় গত ফেব্রুয়ারি মাসে। প্রায় ছ’ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে যে কোনও সময় আফসিনের হৃদযন্ত্র বা তার ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। প্রতিটা মুহূর্ত উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে কাটছিল পরিবারটির। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা সফল হয়।

আফসিনের ভাই ইয়াকুব কুম্বের চিকিৎসকের প্রশংসা করে বলেছেন, উনি আমার বোনের জীবন বাঁচিয়েছেন, আমাদের কাছে উনি ঈশ্বরের দূত। এখন আফসিন ঘাড় উঁচু করে হাসতে পারছে, কথা বলতে পারছে, হয়তো আগামী দিনে পড়াশোনাও শুরু করবে।

তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন, আফসিনের এখনই চিকিৎসা না হলে সে বেশিদিন বাঁচত না। আপাতত তিনি নিয়মিত স্কাইপের মাধ্যমের আফসিনের খবরাখবর নেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pakistan India treatment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE