বিদায় বেলায় কার্যত, একটি ‘গ্লাসনস্ত’ই ঘটিয়ে গেলেন আমেরিকার ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
মার্কিন মুলুকের সেই কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে জেল এ বার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যে জেলে পুরে রেখে দেওয়া হত কুখ্যাত অপরাধীদের। বছরের পর বছর। আক্ষরিক অর্থেই, নির্বিচারে। যাবতীয় মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যে জেলের ভেতরে অপরাধীদের ওপর চালানো হত অমানুষিক অত্যাচার। নারী, পুরুষ নির্বিশেষে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মঙ্গলবার, ওই কুখ্যাত জেলটি বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন কংগ্রেসে। ওই প্রস্তাব দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘এই একুশ শতকে আমাদের মতো দেশে এই জেল চালু রাখার অর্থই হল, আমরা যে মূল্যবোধকে মর্যাদা দিই, তার অমর্যাদা করা।’’
আরও পড়ুন- শতায়ুর সঙ্গে পা মেলালেন ওবামা দম্পতি
পরে হোয়াইট হাউসের ‘রুজভেল্ট রুম’ থেকে দেওয়া তাঁর বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেছেন, ‘‘ওই জেল চালু রাখলে যে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত হয় না, তা প্রমাণিত হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ওই জেল গোটা বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা হেঁটও করে দিয়েছে।’’ ২০০৯ সাল থেকেই ‘মানবাধিকারের পক্ষে বিপজ্জনক’ ওই জেল বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওবামা।
২০০২ সালের জানুয়ারিতে ওই জেল চালু হওয়ার সময় তদানীন্তন প্রতিরক্ষা সচিব ডোনাল্ড রামস্ফেল্ড বলেছিলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর অপরাধীদের জন্যই ওই জেল বানানো হয়েছে।’’ কার্যত, ‘শত্রু’ দেশগুলি ধরা পড়া বিপক্ষের সেনা জওয়ানদের ওপর যেমন নির্মম অত্যাচার চালায়, ওই জেলে অত্যাচার চালানো হত সেই ভাবেই। এমনকী, বন্দিদের জলও খেতে দেওয়া হত না। কেউ কেউ তাকে নাজিদের ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’র সঙ্গে তুলনা করত। ভারতে ব্রিটিশ শাসনে আন্দামানের জেলে যে ভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ওপর অত্যাচার চালানো হত, অনেকে তার সঙ্গেও তুলনা করে থাকেন মার্কিন মুলুকের গুয়ান্তানামো বে-র জেলে বন্দি অপরাধীদের ওপর চালানো অত্যাচারের। ২০০২ সালে ওই জেলে প্রায় ৮০০ অপরাধীকে বন্দি করে রাখা হয়। এই মূহুর্তে ওই কুখ্যাত জেলে রয়েছে প্রায় শ’দুয়েক অপরাধী। মার্কিন প্রশাসন সূত্রের খবর। এদের অনেককেই সাউথ ক্যারোলিনা, কানসাস ও কলোরাডোর জেলে নিয়ে যাওয়া হবে। বাকি ৯১ জনকে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে অন্য কোনও দ্বীপের কারাগারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy