মাস দু’য়েকের ব্যবধানে আবার। তল্লাশির নামে ফের এক ভারতীয় মহিলাকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ বার জুড়ল বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগও।
ব্যাগে ব্রেস্টপাম্প অথচ সঙ্গে শিশু নেই— কর্তৃপক্ষের সন্দেহ মেটাতে সে বার ব্লাউজ খুলে ‘পরীক্ষা’ দিতে হয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা গায়ত্রী বসুকে (৩৩)। জানুয়ারির ঘটনা। তার রেশ মিটতে না মিটতেই এ বার পোশাক খুলে নিরাপত্তাকর্মীদের সামনে দাঁড়াতে বলা হলো বছর তিরিশের শ্রুতি বসাপ্পাকে। ঘটনাটি গত বুধবার, ২৯ মার্চের। বেঙ্গালুরু থেকে আইসল্যান্ডে স্বামীর কাছে যাচ্ছিলেন পেশায় স্থপতি শ্রুতি। ফ্রাঙ্কফুর্টে চরম হেনস্থার থেকে বাঁচলেন সেই স্বামীর হস্তক্ষেপেই।
সম্প্রতি ফেসবুকে সেই লাঞ্ছনার কথা বলতে গিয়ে শ্রুতি জানান, ফ্রাঙ্কফুর্টে নেমে যন্ত্রের মাধ্যমে পুরো শরীর স্ক্যানের পরেও সন্দেহ মেটেনি নিরাপত্তাকর্মীদের। তাঁকে আলাদা করে পরীক্ষা করা হবে বলা হয়। শ্রুতি জানান, সপ্তাহ দু’য়েক আগেই তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি তাতেও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বর্ণ বিদ্বেষ ছাড়া এ সব আর কিছু নয়। গায়ের রং বাদামি কিংবা কালো দেখলেই যেন সন্দেহ হয়। যার জেরে সন্দেহভাজনদের লাইন থেকে আলাদা করে সারা শরীর হাতড়ে দেখাটাই যেন অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছে ওদের।’’ কিন্তু শ্রুতির ক্ষেত্রে আরও কড়া পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: পুড়ল প্যারাগুয়ের পার্লামেন্ট
কী সেই পরীক্ষা? ফেসবুকে শ্রুতি লেখেন, ‘‘বছর চারেকের ছেলের সামনেই অন্য একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে সব পোশাক খুলে ফেলতে বলে আমায়।’’ প্রথমটায় ঘাবড়ে গেলেও, পরের মুহূর্তেই বেঁকে বসেন তিনি। তৎক্ষণাৎ ফোন করেন স্বামীকে। আর তিনি ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছতেই ভোল বদলায় নিরাপত্তাকর্মীদের। শ্রুতির দাবি, তাঁর স্বামী আইসল্যান্ডের শ্বেতাঙ্গ বলেই রেহাই মেলে কোনও মতে। পোশাকের উপর দিয়েই শেষ হয় তল্লাশি। কিন্তু সেই অপমানের কথা ভুলতে পারছেন না শ্রুতি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তার মানে কি এটাই দাঁড়াচ্ছে যে, ইউরোপীয় সঙ্গী না থাকলে আমরা ভারতীয়রা কেউ কোত্থাও নিরাপদ নই! নাকি বাইরে এ বার থেকে অন্য ধরনের অন্তর্বাস পরতে হবে! যাতে অন্তত সম্ভ্রমটা বজায় থাকে।’’
তাঁর দাবি, ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে সে দিনই ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। শনিবার পর্যন্ত যার উত্তর মেলেনি। তবে পরিস্থিতির চাপে পড়ে আজই পাল্টা এক পোস্টে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, ‘‘এমনটা ঘটে থাকলে সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। এটা কোনও ভাবেই আমাদের স্বাভাবিক প্রোটোকল নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy