বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে জোরদার কূটনৈতিক দৌত্য শুরু করেছে নয়াদিল্লি। গত এক সপ্তাহে চলেছে রাশিয়া, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিকস রাষ্ট্রগুলির কর্তাদের সঙ্গে কাবুল নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক। আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের আফগানিস্তানের মানবাধিকার সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সরব হয়েছেন। তাঁর কথায়, “আফগানিস্তান অত্যন্ত সঙ্কটজনক সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্ষেত্রে আকাশপাতাল বদল ঘটে গিয়েছে সে দেশে। মানবাধিকারের ক্ষেত্রেও পট পরিবর্তন ঘটেছে। নিকট প্রতিবেশী হিসাবে ভারত পরিস্থিতির উপর
নজর রাখছে।”
তারিখ এখনও স্থির হয়নি কিন্তু শীঘ্রই ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান কাবুল নিয়ে আলোচনার জন্য নয়াদিল্লি আসছেন। সূত্রের মতে— ভারতের মতো, আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ ইরানও সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এটিই সে দেশের কোনও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর প্রথম ভারত সফর।
সদ্য অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‘টু প্লাস টু’ কাঠামোয় বৈঠক করেছে ভারত। সেখানেও মুখ্য বিষয় ছিল কাবুল। আলোচনার পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গোটা আফগানিস্তানেই তালিবানের শক্তি এবং কতৃত্ব ছড়িয়ে পড়েছে।’ কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ভারত এটা ভাল করেই জানে যে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পরে তালিবানের ক্ষমতা দখলের যে প্রক্রিয়াটি ঘটল, তার পরিবর্তনের কোনও আশু সম্ভাবনা নেই। ফলে আংশিক ভাবে হলেও তালিবানকে স্বীকৃতি দিতেই হবে নয়াদিল্লিকে। একেবারে বয়কট করার অর্থ, গোটা অঞ্চলকে প্রতিরোধহীন ভাবে চিন-পাকিস্তান-আল কায়দা-হক্কানিদের হাতে তুলে দেওয়া। কিন্তু এখনই আগ বাড়িয়ে তালিবান সরকারকে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সে দেশের নতুন সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপগুলি কী হয়, বন্ধু প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলি কোন পথে চলে, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় কোনও সূত্র উঠে আসে কি না— সে সব ভাল করে খতিয়ে দেখে তার পরেই সেটি স্পষ্ট হবে। আর তিন দিন পর সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা বা ‘এসসিও’-র বৈঠক। তার পরে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকা যাবেন। ক্রমশ এ ব্যাপারে ভারতের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, ইরানের বিদেশমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে তালিবান ছাড়াও কথা হবে চাবাহার বন্দর নিয়ে। ইরান, আফগানিস্তান এবং ভারতের ত্রিদেশীয় প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ এখন গভীর গহ্বরে। পাশাপাশি ভারতের মতো তেহরানও চাইছে তালিবান সরকারে সে দেশের সমস্ত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব থাকুক। বিশেষ করে শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের হয়ে সরব হতে দেখা যাচ্ছে ইরান সরকারকে। কাবুলে ইরানের সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক প্রভাব যথেষ্ট। তারাও চাইছে না আফগানিস্তান প্রশ্নে শুধু পাকিস্তানের হাতে তামাক খেতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy