Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Pushpak Sen

Pushpak Sen: ইটালিতে বাঙালির চমক!

গোলাপি আর শুধু মেয়েদের রং নেই। পুরুষের রং শুধু নীল-সাদা-কালো নয়। রণবীর সিংহ থেকে হ্যারি স্টাইল, চিরাচরিত ফ্যাশন-ভাবনাকে দুমড়ে মুচড়ে ভাঙছেন অনেকেই।

মায়ের কাপড় কখনও ধুতি, কখনও শাড়ির স্টাইলে। ফ্লোরেন্সে।

মায়ের কাপড় কখনও ধুতি, কখনও শাড়ির স্টাইলে। ফ্লোরেন্সে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৫:০২
Share: Save:

পরনে শাড়ি, নিখুঁত আঁচল, কুচির ভাঁজ। লিঙ্গভেদের বেড়াজাল ভেঙে মিলানের রাস্তায় এক বাঙালি যুবকের ফ্যাশন আপাতত সোশ্যাল মিডিয়ার নতুন ‘সেনসেশন’। ফেসবুকে তাঁকে খুঁজলেই ভেসে উঠছে ‘পপুলার নাউ’। কলকাতার সেই যুবকের নাম পুষ্পক সেন।

আদ্যোপান্ত কলকাতার বাঙালি। ক্যালকাটা বয়েজ়ে স্কুলজীবন। তার পর আশুতোষ কলেজ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করার পরে অতিমারির মধ্যেই এ বছর ইটালি-যাত্রা। ফ্লোরেন্সের বিখ্যাত ফ্যাশন ইনস্টিটিউট ‘পলিমোডা’-য় ‘ফ্যাশন মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন’ নিয়ে পড়তে গিয়েছেন পুষ্পক। আর বিশ্বের ফ্যাশন-রাজধানীতে পা রেখেই হইচই ফেলে দিয়েছেন নেট-দুনিয়ায়।

গোলাপি আর শুধু মেয়েদের রং নেই। পুরুষের রং শুধু নীল-সাদা-কালো নয়। রণবীর সিংহ থেকে হ্যারি স্টাইল, চিরাচরিত ফ্যাশন-ভাবনাকে দুমড়ে মুচড়ে ভাঙছেন অনেকেই। কিন্তু তাই বলে পুরুষের পরনে শাড়ি! কপালে লাল টিপ! আঙুলে নেল পলিশ!

পুষ্পকের কথায়, ‘‘শাড়ি পরলে বা ওই বাহ্যিক সাজে পৌরষত্ব চলে যাবে, তা তো নয়। ভিতরের আমি, আমিই। আমি চেয়েছিলাম, গোটা পৃথিবী শাড়িকে ফ্যাশন-স্টেটমেন্ট হিসেবে দেখুক।’’ কী রকম? ২৬ বছরের তরুণ বলেন, ‘‘এ দেশে এসে দেখেছি, অনেক ভারতীয় রয়েছেন। কিন্তু কেউই তেমন দেশের পোশাক পরেন না। রোজকারের সাজ বা পার্টি, সবেতেই পশ্চিমি পোশাক গায়ে গলাচ্ছেন সকলে। সেই থেকেই মনে হয়।’’ পুষ্পক ঠিক করেছিলেন মিলান ফ্যাশন ফেস্টিভালে শাড়ি পরে যাবেন। কিন্তু অতিমারিতে পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়। শাড়ি পরে চলে যান কলেজেই। জানিয়েছেন, মায়ের অনেকগুলো শাড়ি নিয়ে এ দেশে এসেছেন। সে সব নিয়েই পরীক্ষামূলক সাজ চলছে। ফ্লোরেন্সের রাস্তায় শাড়ি দিয়ে ধুতি পরেও হেঁটেছেন পুষ্পক। কলেজেও গিয়েছেন। বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়েছেন। পুষ্পকের কথায়, ‘‘আমাদের দেশের যে একেবারে নিজস্ব, সকলের থেকে আলাদা ফ্যাশন রয়েছে, সেটাই বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছি।’’

বেগমপুরী, বালুচরী, কাতান... কত রকমের শাড়ি। প্রত্যেক শাড়িতে গল্প খুঁজে পান পুষ্পক। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা পশ্চিমের পোশাকে স্বচ্ছন্দ। কিন্তু পশ্চিমের দেশগুলো আমাদের পোশাক সম্পর্কে কতটুকু জানে! এক-একটা শাড়ি, এক-একটা গল্প। সেই গল্প গোটা বিশ্বকে শোনাতে চেয়েছি আমি।’’

অতিমারিতে ‘তাঁতি-বন্ধুদের’ আর্থিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত পুষ্পক। তাঁর বক্তব্য, প্রতিদিন ওঁরা যে শিল্প সৃষ্টি করে চলেছেন, তা গোটা পৃথিবীর জানা উচিত। এক দিনে হয়তো দুনিয়া বদলে ফেলতে পারবেন না তিনি, একটু-একটু করেই বিশ্বমঞ্চে ভারতীয় পোশাকের সম্ভারকে তুলে ধরতে চান বঙ্গ তনয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE