মায়ানমার সীমান্তে সতর্ক বাংলাদেশের বিজিবি বাহিনী। ছবি: রয়টার্স।
প্রায় ৭২ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর মায়ানমার সেনা এবং ‘বর্ডার গার্ড পুলিশ’ (বিজিপি) বাহিনীর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ঘাঁটি তাউং পিও (বাম) দখল করে নিলেন বিদ্রোহী আরাকান আর্মির যোদ্ধারা। বাংলাদেশের কক্সবাজার লাগোয়া মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু শহরের অদূরে কয়েকটি সীমান্ত চৌকি দখলের কথা বুধবার জানিয়েছে তাইল্যান্ডে নির্বাসিত গণতন্ত্রপন্থী সরকারের সংবাদমাধ্যম ‘ইরাবতী’।
বিদ্রোহী তিন গোষ্ঠীর জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স, গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ) এবং আরাকান আর্মি গত রবিবার একযোগে জুন্টা সরকার নিয়ন্ত্রিত তাউং পিও (বাম) চৌকি এবং তাউং পিও (ডান) সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল। প্রায় তিন দিন লড়াই চালিয়ে সেনা ঘাঁটিটি দখলে নেয় তারা। এর পর থেকে প্রাণের ভয়ে তিনশোরও বেশি মায়ানমারের সেনা এবং বিজিপির সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ নভেম্বর থেকে সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’। এর পরে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয়, আরাকান আর্মি, ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং ‘চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স’ (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ)-এর মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিও। জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
গত এক সপ্তাহের যুদ্ধে রাখাইন প্রদেশের পাশাপাশি সাগাইং, মাগউই ও মান্দালে অঞ্চল এবং কাচিন ও কারেন প্রদেশে বেশ কিছু সেনাঘাঁটি, শহর, বাণিজ্যিক কেন্দ্র এমনকি বন্দরের দখল হারিয়েছে জুন্টা সরকার। রাখাইন প্রদেশের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় কামানের গোলায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে কয়েক জন বাংলাদেশি নাগরিকের। জুন্টা সমর্থক সেনা এবং বিদ্রোহী জোটের লড়াইয়ের মাঝে পড়ে ঘরছাড়া কয়েক হাজার সাধারণ নাগরিক আশ্রয় নিয়েছেন মিজ়োরাম-সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যে। এই আবহে বুধবার মায়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সফরে আসা বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy