ফাইল চিত্র।
তুষারপাতের মধ্যে টানা ৩৫ ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত সোমবার সকালের দিকে ইউক্রেন থেকে রোমানিয়া সীমান্ত পার হতে পারলেন বিতস্তা গুপ্ত।
উত্তরপাড়ার মেয়ে বিতস্তা ইউক্রেনে টার্নোপিল মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম বর্ষের ছাত্রী। ইউক্রেনের উপরে রাশিয়া তাদের আক্রমণ শানাচ্ছে মূলত পূর্ব দিক থেকে। কিন্তু পশ্চিমের টার্নোপিলেও এর মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বলে বিতস্তা তাঁর বাবা দেবাশিস গুপ্তকে জানিয়েছিলেন। এ দিন দেবাশিসবাবু জানালেন, সেই আতঙ্কে মেয়ে এবং তার অন্য সহপাঠীরা রোমানিয়া সীমান্তের দিকে রওনা দেয়।
রোমানিয়া সীমান্ত পেরোনোর সময়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষা। প্রচণ্ড ভিড়। ইতিমধ্যেই রোমানিয়া সীমান্তে ভারতীয়দের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। দেবাশিসবাবু জানালেন, বিতস্তা তাঁকে বলেছেন যে, সীমান্তের পুলিশেরা বিষয়টা ঠিক মতো পরিচালনা করতে পারছিলেন না। ফলে সীমান্ত পেরোতে এত দীর্ঘ সময় লেগে গিয়েছে। প্রচণ্ড ঠান্ডা। তার সঙ্গে তুষারপাত। মাথার উপরে কিচ্ছু নেই। নেই একটা কম্বল। খাবার নেই, পানীয় জল নেই। নেই শৌচাগার। প্রায় ৩৫ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বিতস্তা রোমানিয়ায় ঢুকতে পেরেছেন। রোমানিয়ায় থাকার জন্য তিন দিনের ভিসা দেওয়া হয়েছে। দেবাশিসবাবু জানালেন, রোমানিয়ায় ঢোকার পরে প্রথমেই খাওয়া-দাওয়া, গরমজল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এর পরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একটি সেন্টারে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে বুখারেস্টে। দেবাশিসবাবু জানালেন ওখান থেকে দেশে ফেরার বিমান ধরবেন বিতস্তা।
বিতস্তা সীমান্ত পেরোলেও এখনও তা করতে পারেননি শ্যামবাজারের সুপ্রতিম ঘোষ। সুপ্রতিমবাবু গত তিন বছর ধরে ইউক্রেনের ক্রিভিরি শহরে সেফটি ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করছেন। এ দিন তাঁর স্ত্রী শর্মিষ্ঠা জানালেন, কোনও মতে লুভো শহর পর্যন্ত সুপ্রতিমবাবু যেতে পারেন। এর পরে যেতে হবে পোল্যান্ড সীমান্তে। কিন্তু সীমান্তে যাওয়ার ট্রেনে ওঠা অসম্ভব। তুমুল ভিড়! বাস পাওয়া যাচ্ছে না। ভারতীয় দূতাবাসে ফোন করলে কেউ ধরছে না। অবশেষে মঙ্গলবার সেই বাসের ব্যবস্থা হয়, যে বাস সুপ্রতিমদের পোল্যান্ড সীমান্তে নিয়ে যাবে।
কিভে আটকে পড়া ডাক্তারি পড়ুয়া ঋতিন জ্যাকব অ্যান্টনি রাজন জানালেন, ভারতীয় দূতাবাস কোনও সাহায্যই করছে না। কোনও মেসেজের উত্তর দিচ্ছে না। বাঙ্কারে জড়ো হওয়া ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণ খাবার নেই। তাঁরা আধপেটা খেয়েই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy