নিউ জার্সি আর পেনসিলভেনিয়ার হিমেল হাওয়ায় এ বার মরু-উষ্ণতার ছোঁয়া! শুধু বাঙালি নয়, ভারত জোড়া বৈচিত্র্যের ঐক্যকে থিমের মোড়কে তুলে ধরতে এ বারে 'ত্রিনয়নী'র পুজো প্রাঙ্গণ সেজে উঠেছে রাজকীয় রাজস্থানের সাজে। উট, হাতি, আর ময়ূরের মনোমুগ্ধকর সজ্জায় সোনার কেল্লা আর রাজকাহিনীর রাজপ্রাসাদের আমেজ।
প্রবাসের মাটিতে যাঁরা প্রথম থিমের পুজো শুরু করেছিলেন, সেই 'ত্রিনয়নী'র এই চার বছরের পথ চলা যেন এক রূপকথার গল্প।
হাতে গোনা দশটি পরিবারকে নিয়ে ২০২২ সালে শুরু হয়েছিল যে যাত্রা, আজ তা তিরিশটি পরিবারের এক বিশাল সংগঠনে পরিণত।
নিউ জার্সির বুকে প্রতি বছর নিত্য নতুন থিমে দুর্গোৎসবকে এক অন্য মাত্রা দিচ্ছে এই সংগঠন।
'ত্রিনয়নী'র সদস্যদের মূল উদ্দেশ্যই হল শারদোৎসবের আনন্দ মুখরতায় বাঙালিয়ানাকে ষোলো আনা উদ্যাপন করা। কখনও সত্যজিৎ-বিভূতিভূষণের 'পথের পাঁচালী'র যাত্রায়, আবার কখনও শৈশবের ভালবাসার 'কলকাতা'য় ফিরে গিয়েছে এই পুজো।
রাজস্থানের মতো একটি 'রয়্যাল ডেস্টিনেশন' থিম হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে 'ত্রিনয়নী'র প্রেসিডেন্ট সৌম্য মুহুরীর বক্তব্য, ‘ভারত মানে বৈষম্যের মাঝে ঐক্য, নানা সংস্কৃতি, নানা ভাষা, নানা বৈচিত্র্য। সেই সৌন্দর্যকেই ফুটিয়ে তুলতে এ বারের থিম রাজস্থান।’এই ভাবনাতেই যেন লুকিয়ে আছে প্রবাসের মাটিতে শিকড়ের টান আর হৃদয়ের আবেগ।
এই ঘরোয়া পুজোয় নিউ জার্সি এবং সংলগ্ন এলাকার ৫০০-রও বেশি মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে এর জনপ্রিয়তা।
এখানকার সিঁদুরখেলা এখন এক বড় উৎসব। শুধু বাঙালি নয়, ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মহিলারাও মেতে ওঠেন সেই আচার-আনন্দে।
এ বছর নিউ জার্সি ও সংলগ্ন এলাকার পাঁচশোরও বেশি মানুষ উপস্থিত থাকবেন এই পুজোয়।
শারদোৎসবের আনন্দে, রাজস্থানের রাজকাহিনিতে— ত্রিনয়নীর মণ্ডপে এ বার যেন মিলছে দুই দিগন্তের সংস্কৃতি। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)