সংগৃহিত চিত্র
পুজোর ঠিক আগেই মুক্তি পেল প্রমিতা ভৌমিক পরিচালিত, সুদীপ্তা চক্রবর্তী এবং জয় সেনগুপ্ত অভিনীত ছবি ‘অহনা’। ছবির প্রচার-সহ রিয়েলিটি শোয়ের শ্যুটিং, সবটা মিলিয়ে বেশ ব্যস্ততাতেই দিন কাটছে অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর। তার মধ্যেও কি অভিনেত্রী পুজোর ৪ দিন কী ভাবে কাটাবেন তার পরিকল্পনা করে উঠতে পারলেন? আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সুদীপ্তা জানালেন, পুজোর পরিকল্পনা থেকে কেনাকাটা- কোনওটাই এখনও হয়ে ওঠেনি তাঁর।
দুর্গাপুজো প্রায় দরজায় কড়া নাড়ছে। আর কিছু দিন পরেই সপরিবারে মর্ত্যে আবির্ভূত হবেন দেবী। শ্রেষ্ঠ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবে আপামর বাঙালি। এই ৪ দিনের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সুদীপ্তা বলেন, “পুজোতে কোনও পরিকল্পনা করিনি। বাড়িতেই কাটাব ৪ দিন।” পরিকল্পনা এবং পুজোর কেনাকাটার বিষয়ে তাঁর আরও সংযোজন, “কিছু করার সময় পাইনি এখনও। একটি ডেইলি শো, ‘লাখ টাকার লক্ষ্মীলাভ’ করছি, সেটাতে অনেকটা সময় যাচ্ছে, সঙ্গে ‘অহনা’র প্রচার চলছে। তাই কেনাকাটা এখনও করা হয়নি। আমার মনে হয় পুজোর প্রথম দু’দিন কেনাকাটা করতেই কেটে যাবে। পঞ্চমীর দিন পর্যন্ত আমার শ্যুট আছে। অনেককে দেওয়ার থাকে, অনেক কিছু করার থাকে। ষষ্ঠী-সপ্তমী আমার মনে হয় তাতেই চলে যাবে। অষ্টমীর দিন হয়তো একটু বেরোব। নইলে আমার মূলত বাড়িতেই থাকার পরিকল্পনা।”
যত সময় যায় পুজোর আবেগ, আমেজ, অর্থ- তত বদলাতে থাকে। কিন্তু ছোটবেলার পুজোর স্মৃতি কম-বেশি সকলের মনেই একটা বিশেষ জায়গা দখল করে থাকে। পিছন ফিরে তাকালে এই সময়ের কোন স্মৃতি আজও মনে পড়ে সুদীপ্তার? প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই অভিনেত্রীর চটজলদি উত্তর আসে, “ক্যাপ ফাটানোর স্মৃতি। ওইটা আজকালকার বাচ্চারা আর কেউ ফাটায় না। ওই আওয়াজটা পাই না আর।” কেবল ‘ক্যাপ-বন্দুক’ নয়। ঢাকের আওয়াজও অনেকটাই বদলে গিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, “আগে একটা ‘অরগ্যানিক’ ঢাকের আওয়াজ ছিল, এখন পুরোটাই ভীষণ একটা প্লাস্টিক...। সঙ্গে পুজোর এই এত হোর্ডিং, এখন তো আবার দেখছি এলইডি স্ক্রিন লেগে গিয়েছে অনেক জায়গায়। যার যত বাজেট, তার তত বৈভব। এত বৈভব দেখানো আমার ভাল লাগে না।”
পুজোর আলোচনার ফাঁকেই উঠে আসে সদ্য মুক্তি পাওয়া ছবি ‘অহনা’র প্রসঙ্গ-ও। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলেই একাধিক প্রশংসা দেখা যাচ্ছে সুদীপ্তা-জয় অভিনীত এই ছবির। মোটের উপর কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে অভিনেত্রী বলেন, “সাড়া খুব ভাল পাচ্ছি। যাঁরা দেখছেন, তাঁরা খুবই ভাল বলছেন। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই দেখছেন কম মানুষ। প্রথমত, প্রচার তো অত আড়ম্বর করে করা যায়নি। নতুন পরিচালক, তিনিই প্রযোজক, ছোট বাজেটের ছবি। সে রকম কোনও বড় তারকা নেই। শান্ত, ব্যাকগ্রাউন্ড সঙ্গীত নেই এমন একটা ছবি, সেটা যে লাইন দিয়ে হাজার হাজার মানুষ টিকিট কেটে দেখবেন এমন আশা আমি করি না। তা ছাড়া পুজোর সময় অনেক ছবি মুক্তি পাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ছবি বেশি দিন থাকবে না হলে। আমি জানি এ সবই।”
যে ছবি ‘দাদাসাহেব ফালকে চলচ্চিত্র উৎসব’ সহ একাধিক জায়গায় সম্মানিত এবং প্রদর্শিত হয়েছে, তেমন একটি ছবি মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি শো পেল! সুদীপ্তার কথায়, “বাংলায় এই ধরনের ছবির বাজার প্রায় নেই। এখন একটা ছবির ভাগ্য নির্ধারণ হয় প্রথম ৩ দিনে। শুক্র, শনি এবং রবিবার কী টিকিট বিক্রি হল। মানুষ এই ছবির কথা জানতে জানতেই হল থেকে চলে যাবে। এটাই এখন এখানকার ব্যবস্থা। আমি অভিযোগ করেও কিছু করতে পারব না। আর আমি সারাক্ষণ ঘ্যান ঘ্যান করতে, অভিযোগ করতেও পছন্দ করি না।”
দেবী শক্তির আরাধনার ঠিক মুখে মুক্তি পাওয়া প্রমিতা ভৌমিকের ‘অহনা’ও বলবে এক নারীর কথা। সুদীপ্তা তাঁর এই নতুন কাজ প্রসঙ্গে বলেন, “এখানে এমন এক মেয়ের গল্প ফুটে উঠেছে, যার জীবন আরও অনেক মেয়ের মতোই। পুরুষতন্ত্র আসলে আমাদের মাথার মধ্যে থাকে। সেটা মহিলা, পুরুষ নির্বিশেষে সবার মধ্যেই থাকে। সেটাকেই এই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।