laxmi Puja 2022

নিয়ম মেনে হয় এক চড়া ভোগ! সুদীপার বাড়ির পুজোয় আর কী কী বিশেষত্ব?

রুপোর প্রতিমা সারা বছর পুজো পান তাঁর বাড়িতে। সঙ্গে অধিষ্ঠিত নারায়ণও। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোতেও সেই প্রতিমারই পুজো হয় অভিনেত্রীর বাড়িতে। 

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২২ ২০:১২
Share:

বাঙালির অন্দরমহলে তাঁর পরিচিতি 'রান্নাঘর'-এর রানি হিসেবেই। সঙ্গে রয়েছে অভিনয় ও লেখনীর গুণ। সুদীপা চট্টোপাধ্যায়কে চেনেন না, ছোট পর্দার দর্শককুলে এমন মানুষ পাওয়া ভার। তাঁর নতুন নতুন রেসিপির খোঁজে মুখিয়ে থাকেন মানুষ। তবে শুধু বিদেশি রান্না বা বাহারি রান্না নয়, সুদীপা কিন্তু পারদর্শী বাঙালি রান্নাতেও। ভোগ রান্নাতেও তাঁর জুড়ি মেলা ভার। বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় ভোগ রান্না থেকে পুজোর জোগাড়- সবই একা যেতে সামলান দশভুজার মতো। কথা বললেন আনন্দ উৎসব টিমের সঙ্গে।

Advertisement

বাড়িতে রয়েছে প্রতিষ্ঠিত লক্ষী প্রতিমা। রুপোর প্রতিমা সারা বছর পুজো পান তাঁর বাড়িতে। সঙ্গে অধিষ্ঠিত নারায়ণও। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোতেও সেই প্রতিমারই পুজো হয় অভিনেত্রীর বাড়িতে।

শাস্ত্রে আছে- মা লক্ষ্মী চার যুগে চার অবতারে মর্তে জন্ম নেন। তাঁর মধ্যে একটি রূপ হল ত্রেতা যুগের সীতা। চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে মা পূজিত হন রামের পত্নী সীতার রূপেই। তাই পুজোর ভোগেও থাকে সীতার প্রিয় এক চড়া ভোগ।

Advertisement

এর পিছনেও আছে এক অন্য গল্প। বলা হয় লঙ্কা জয় করে ফেরার পরে সীতা যখন অন্তঃসত্ত্বা, এক দিন তাঁর খুব এক চড়া ভোগ খাওয়ার ইচ্ছা হয়। এ দিকে, প্রজার কথায় প্ররোচিত হয়ে রাম সে দিনই লক্ষ্মণকে আদেশ দেন সীতাকে প্রাসাদ-ছাড়া করার। লক্ষ্মণ পড়েন মহা ফ্যাসাদে। এক দিকে রাজার আদেশ, অন্য দিকে মাতৃসমা সীতা। রাজ-আদেশ পালন করতে তখন তিনি এক চড়া ভোগ খাওয়ানোর নাম করেই সীতাকে নিয়ে গিয়ে রেখে আসেন ব্রাহ্মণ গৃহে।

এক সময়ে এই এক চড়া ভোগ তৈরি হত শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ গৃহেই। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। তাই সুদীপা নিজে হাতেই প্রস্তুত করেন এই ভোগ। এই প্রসাদ তৈরি করা কিন্তু মোটেই সহজ কাজ নয়। কঠোর নিয়ম মেনে তৈরি করতে হয় এটি। শাস্ত্র মতে এক আঁচে, এক ফুটেই তৈরি করতে হবে এই ভোগ। তেল, নুন, মিষ্টি, বা অনান্য সরঞ্জাম- সব কিছু দিতে হবে প্রথম বারেই। কোনও জিনিসই এক বারের বেশি দেওয়া যাবে না। দেওয়া যাবে না ঘি। নেপথ্যে অবশ্য আছে বৈজ্ঞানিক কারণ। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বদ হজমের সুযোগ থাকে, তাই লঘুপাক খাবারই শরীরের জন্য ভাল। সুদীপার বাড়ির পুজোয় এ ছাড়াও ভোগ হিসাবে দেওয়া হবে ভিজে মুগ ডাল চিনি ও নারকেল দিয়ে মাখা, সর্ষে বাটা ও নারকেল দিয়ে তৈরি বরবটির তরকারী।

বছরে এই এক দিনই রান্না হয় এক চড়া ভোগ। সুদীপা জানান, প্রথা মেনেই বাড়িতে হয় এই পুজো। সন্ধ্যে বেলায় পূর্ণিমার চাঁদ দেখে শুরু হয় পুজোর কাজ। চঞ্চলা লক্ষ্মীর সঙ্গে সঙ্গে পূজিত হন নারায়ণও। তাঁর জন্য ব্যবস্থা আছে ভোগের। সেই রান্নায় পড়ে না লঙ্কা আর হলুদ। তবে থাকবে ঘি। লক্ষ্মীপুজোর পাঁচালি পড়েন সুদীপা নিজেই।

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন