ঘোর বৈষ্ণব। বাড়িতে রাধা-কৃষ্ণের নিত্যপুজো। কিন্তু এক বার উপহারে পেয়েছিলেন একটি কালীমূর্তি। সেই থেকেই শুরু। মা কল্যাণী অধিকারী নিজ হাতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই মূর্তি। তার পর থেকেই বাড়িতে দেবীর আরাধনা।
এই বছরও এর অন্যথা হল না। নিয়ম, নীতি মেনে নিষ্ঠা ভরে নিজের বাপের বাড়ির শ্যামার পুজোয় মন দিলেন অভিনেত্রী তথা রাজনীতিক পাপিয়া অধিকারী।
শ্যামবর্ণা দেবীর মুখ। স্নিগ্ধ সেই চাহনি। অভিনেত্রী বলেন, “আমার কালীর এই শান্ত চেহারাই আমার পছন্দের। আমরা তো মাছে-ভাতে বাঙালি, আমরা শান্তিপ্রিয়। তাই মাকেও এই রূপেই পছন্দ করি।”
পুজোর ঘরে ঢুকতেই নস্টালজিয়ার নির্যাস। আলমারির গায়ে আটকানো সাদা কালো ছবিগুলিও যেন আজও রঙিন অভিনেত্রীর স্মৃতিতে। কখনও শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মা কল্যাণী, আবার কখনও ‘বিবি পায়রা’ হয়ে তিনি।
গোটা ঘর যখন কাঁসর-ঘণ্টার শব্দে মুখরিত, পাপিয়া অধিকারী তখন ডুব দিলেন সেই নস্টালজিয়ায়। ঘুরিয়ে দেখালেন ভিতরের সমস্ত ঘর। এবং একটি বিশেষ সিঁড়ি।
স্মৃতির সিঁড়ি ভেঙে নামতে নামতেই অভিনেত্রী বলে চললেন, “এখান থেকেই আমার ‘পাপিয়া অধিকারী’ হয়ে ওঠা। এই সিঁড়ি ভেঙেই আমি আমার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, নাচের স্কুলে গিয়েছি।”
আর সিঁড়ির ঠিক পাশেই তাঁর লেখার ঘর। মজা করে তিনি এও বলেন, “প্রেমিকদেরও আনাগোনা কম ছিল না এই সিঁড়ি বেয়ে!”
কথা প্রসঙ্গেই আলাপ জমল বাড়ির আত্মীয়-স্বজন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে। পুজোর প্রস্তুতি কি তাঁদের ছাড়া সম্পূর্ণ হয়!
ভোগের ক্ষেত্রেও ছিল এলাহি আয়োজন। পাতে ছিল খিচুড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, পোলাও, লুচি, আলুর দম, ধোকা, বাঁধাকপি, ছোলার ডাল, পনির, আর শেষ পাতে দই, মিষ্টি ও পায়েস।
অভিনেত্রী বলেন, “আমার মা থাকলে আরও কতই না আয়োজন হত। এক সময়ে পাড়ার সকলে ধেয়ে আসতেন এই পুজোয়।” আমন্ত্রিত থাকতেন ইন্ডাস্ট্রির তারকারাও।
সামান্য হেসে তিনি যোগ করেন, “আমার মা যাঁদের পছন্দ করতেন, তাঁরাই আসতেন। যেমন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, বসন্ত চৌধুরী, মাধবী মাসি- সকলেই উপস্থিত থাকতেন।”
আর ইন্ডাস্ট্রির ‘বিশেষ’ মানুষেরা? সলজ্জ কণ্ঠে হেসে অভিনেত্রী বলনে, “সে সব কথা পরে হবে…” (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)