Sreeja Dutta’s Puja Plan

“অঞ্জলি দিতে গিয়ে চোখাচোখি হয়, সঙ্গে হালকা হাসি বিনিময়”, পুজোর প্রেম নিয়ে অকপট সৃজা

গত দুই বছর ছবি মুক্তির ব্যস্ততা ছিল, এ বার পুজোয় কী করছেন সৃজা?

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:০৩
Share:

সংগৃহিত চিত্র

‘বাঘা যতীন’-এর ‘ইন্দু’ তিনি। পর পর দেবের সঙ্গে দু’টো ছবিতে নজর কেড়েছেন। আর তাঁর সেই দু’টো ছবিই পুজোর সময় মুক্তি পেয়েছিল। তবে এই বছর ছবি মুক্তি না পেলেও বিশেষ চমক থাকছে বলেই জানালেন সৃজা দত্ত। একই সঙ্গে আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তাঁর এ বারের দুর্গাপুজোর প্ল্যান।

Advertisement

সদ্যই একটি ছবির শ্যুটিং শেষ হল তাঁর। এ বার কদিনের বিশ্রাম। পুজোর পরিকল্পনা হল কিনা জানতে চাইলে সৃজা বলেন, “এ বছর যে পরিকল্পনা রয়েছে সেটা ক্রমশ প্রকাশ্য। একটা জিনিস তো অবশ্যই আছে, সেটা খুব শীঘ্রই জানতে পারবেন এই পুজোতেই। আমার দু’টো পুজো রিলিজের পর, এ বছরও একটা ছোঁয়া তো থাকবেই। আর পরিকল্পনা বলতে, আমি এই সদ্যই একটা প্রজেক্টের কাজ শেষ করলাম। পুজোর পর আমার আবার একটা নতুন কাজ শুরু হবে, সেটার জন্য বাইরে যাব। তাই ওই মাঝের সময়টা পরিবার আর বন্ধুদের সবার সঙ্গে কাটিয়ে ফের কাজ শুরু করব। সে ভাবেই সব পরিকল্পনা করছি। এ ছাড়া পুজোর মধ্যেও কয়েকটা কাজ রয়েছে।”

জমিয়ে ঠাকুর দেখা, না কারও বাড়ি বসে আড্ডা, পুজোয় কোন দলে পড়েন অভিনেত্রী? পর্দার ‘ইন্দু’ বলেন, “আমার অধিকাংশ বন্ধুরা যেহেতু কলকাতা বা দেশের বাইরে থাকে, ওরা এই সময়টাতেই ফেরে। রাতে ওদের সঙ্গেই বেরোই। ওরা এসে বাড়ির সামনে গাড়ির হর্ন বাজাতেই থাকে, ভাব এমন যে ‘নামবি কি নামবি না বল’। তারপর সারা রাত ঘোরা হয়, অনেক জায়গায় যাওয়া হয়। সারা রাত ঘুরে বাড়ি আসি, একটু বিশ্রাম নিয়ে সকালটা পরিবারের সঙ্গে কাটাই, তার পর বিশ্রাম নিয়ে ফের বিকেলটা বন্ধুদের সঙ্গেই কাটে। সময়টা ভাগ করে নিই এ ভাবে।”

Advertisement

শ্যুটিংয়ের চাপের ফাঁকে কি তবে কেনাকাটা হল? নাকি অনলাইন দুনিয়াই ভরসা? সৃজার উত্তর, “না না, কিচ্ছু হয়নি। শ্যুট করে এই ফিরলাম সবে। এর মধ্যে যেহেতু পুরোপুরি বাইরে শ্যুট করছিলাম আমরা, শরীরটা প্রচণ্ডই খারাপ। চোখে ইনফেকশন মতো হয়েছিল, ট্যান পড়ে গিয়েছে, জ্বর, কাশি। খুব খারাপ অবস্থা চলছিল। এই শ্যুটিং শেষ হওয়ার পর একটু ক’দিন সময় পাব তখন কেনাকাটা করব। দিন তো এসেই গেল…” তবে কোন ছবির শ্যুটিং, কী বৃত্তান্ত কিছুই খোলসা করলেন না ‘টেক্কা’র ‘বৃষ্টি’। তবে আশ্বাস দিলেন যে খুব শীঘ্রই জানাবেন সবটা।

তা হলে এ বার যা যা কিনবেন তাতে কী কী থাকবে? পুজোয় কেমন সাজবেন তিনি? সৃজা বললেন, “পুজোর সময় সাবেকি সাজ-পোশাক ছাড়া আমি কিচ্ছু পরতে পছন্দ করি না। শাড়ি পরতে সব সময় ভাল লাগে, আর গত দুই বছর, যবে থেকে আমার ডেবিউ হয়েছে তবে থেকে আমি প্রচুর শাড়ি পরেছি। এই পুজোর সময়টা বিশেষ করে আমার সাবেকি সাজ, ছোট্ট টিপ এ সব ভাল লাগে। বেশ একটা পুজো-পুজো ব্যাপার থাকে। অন্য সময় তো আমরা এমনই অনেক কিছু পরি, কিন্তু এই সময় বাঙালিয়ানা সাজেই ধরা পড়তে ভাল লাগে।” তবে মাকে ছাড়া একদমই কেনাকাটা করেন না বলেই জানালেন সদ্য কলেজের গণ্ডি টপকানো সৃজা। বললেন, “কেনাকাটা করতে গেলে আমাকে সব সময় মাকে নিয়ে যেতে হয়। আমাকে পরে দেখিয়ে দেখিয়ে কিনতে হয়, নইলে অনলাইনে কিনলে দেখিয়ে, ১০০ বার ট্রায়াল করে কিনতে হয়। মা সম্মতি দিলে তার পর সেটা আমার বাড়ি আসে। এই শ্যুটিং শেষ হল, মাঝে ক’দিন কাজ আছে, সে সবের ফাঁকে এই যে এক-দু’দিন সময় পাব টুক করে বাইরে থেকে কেনাকাটা করে চলে আসব।”

পড়াশোনা, কাজের ব্যস্ততা সব নিয়েই জীবন কাটছে তাঁর। কিন্তু এ সবের মাঝে পুজো এলে, পিছু ফিরে তাকালে ছোটবেলার কোন স্মৃতি মনে পড়ে তাঁর? প্রশ্ন শুনেই অভিনেত্রী জানালেন তাঁর ছোটবেলার পুজোর স্মৃতির অনেকটাই জুড়ে রয়েছেন তাঁর দাদু। সৃজা বলেন, “ছোটবেলায় আমি আমার মামাবাড়িতে মানুষ হয়েছি। মা তো ছিলই, আমার দাদু-দিদাই বড় করেছেন আমায়। দাদুর সঙ্গে অনেক সুন্দর সুন্দর স্মৃতি আছে। দাদুর ক্লাবে পুজো হতো। এক সঙ্গে হাত ধরে অঞ্জলি দিতে যেতাম, উনিই আমায় হাত ধরে ধরে নিয়ে যেতেন, নিয়ম কানুন দেখাতেন, যে ‘এইটা দেখ, ওইটা দেখ’। দাদুর সঙ্গে ওই স্মৃতিগুলি মিস্ করি।” কেবল দাদুর স্মৃতি নয়, তিনি মিস্ করেন ছোটবেলার আগে পুজোর জামা গোনার দিনগুলিও। অভিনেত্রীর কথায়, “তা ছাড়া পুজোর আগে এই সময় ছোটবেলায় পরীক্ষা চলত। তখন অপেক্ষা থাকত কখন পরীক্ষা শেষ হবে, আর কেনাকাটা করতে যাব। ১০-১৫টা করে জামা হতো, সেটা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা চলত যে কার ক’টা জামা হল। এখন আর ক’টা জামা হল, কী হল গোনা হয় না যেহেতু সারা বছরই টুকটাক কেনা হয়। ছোটবেলার ওই মুহূর্তগুলি মিস্ করি।’

আর পুজোর প্রেম? অঞ্জলির ফাঁকে হালকা চোখে চোখে কথা, হাসি আদানপ্রদান হয়েছে নাকি কখনও? লাজুক স্বরে অভিনেত্রী বলেন, “পুজোর প্রেম বলতে খালি ওই চোখাচোখি অবধি। তার বেশি বিষয়টা এগোয়নি। বিষয়টা আগের বছরই হয়েছে। আমি আমার বাড়ির এখানে প্যান্ডেলে মায়ের সঙ্গে অঞ্জলি দিতে গিয়েছিলাম। তখনই সেখানে একজনের সঙ্গে এমন হয়, সেও আমায় দেখছিল, আমিও তাকে দেখছিলাম। তার পর ওখান দিয়ে বেরিয়ে ফের একটু চোখাচোখি হয়, হালকা হাসি বিনিময় ব্যস ওটুকুই। মা তার পর বলে ‘চলো এ বার, অন্য এক জায়গায় যেতে হবে’। তো চলে যাই। পরে আর তার সঙ্গে কখনও দেখা হয়নি। আমার মনে হয় না সে আমার পাড়ায় থাকে, কারণ আগে কখনও দেখিনি।”

আগামী কাজের কথা না জানালেও, দেবীর কাছে এ বার কী প্রার্থনা থাকবে সেটা ভাগ করে নিলেন সৃজা। বললেন, “এটাই প্রার্থনা থাকবে যেন এখন যেমন আমি পুজোর আগে আগে কেনাকাটা করার সময় পাচ্ছি না সেটা যেন পরের বছরও না পাই। গোটা বছর কাজ করছি, সেটা এক রকম। কিন্তু পুজোর আগে কাজ করা, সেটার ব্যস্ততা অন্য রকমের। এত দিন তো আমার পড়াশোনাও চলছিল, তাই মাঝে মধ্যে ব্রেক নিচ্ছিলাম কাজ থেকে, সেটাও শেষ হল। ফলে এ বার পুরোদমে কাজে ফিরছি। প্রত্যেক বছর যেন পুজোর আগে এমনই ব্যস্ততা থাকে আর আমি কেনাকাটার জন্য কম সময় পাই।”

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement