সংগৃহিত চিত্র
কখনও তিনি ‘বাপিবাবু’, কখনও আবার ‘আবির’, কখনও অন্য কিছু। তবে যে নাম বা চরিত্রেই তিনি পর্দায় অবতীর্ণ হন না কেন, তাঁর অভিনয়ে বারংবার মুগ্ধ হন তাঁর অনুরাগী, দর্শকরা। সেই সুহোত্র মুখোপাধ্যায়ের এ বার পুজোয় কী কী পরিকল্পনা আছে? কী ভাবে এই ৪টে দিন কাটাবেন সবটাই ভাগ করে নিলেন তিনি আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে।
পুজোর আর মাত্র ক’টা দিন বাকি, এ দিকে এখনও পুজোর পরিকল্পনা হয়নি তাঁর! হ্যাঁ, তেমনটাই জানিয়ে সুহোত্র বললেন, “এ বারের পুজোয় সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই। প্রতি বারই এক পরিকল্পনা থাকে আসলে। ছোটবেলায় যে রকম পুজো কাটত এখন আর সে রকম কাটে না। মূলত বাড়ি বসেই কাটানোর পরিকল্পনা। তবে কিছু অনুষ্ঠান আছে সেখানে যাব। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাব। বাড়িতেই আড্ডা বসবে এ সবই।” আর ঠাকুর দেখা? “ঠাকুর দেখার কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে এ বার একটা পুজো পরিক্রমায় যাচ্ছি, সেখানেই অনেক ঠাকুর দেখা হয়ে যাবে”, জবাব অভিনেতার।
কথা প্রসঙ্গে যখন ছোটবেলার কথা উঠলই, তখন কি আর সেই সময়ের পুজোর গল্প বাদ যেতে পারে? একে বারেই নয়। ছেলেবেলার পুজোর কোন স্মৃতি আজও টাটকা জানতে চাইলে অভিনেতা বলেন, “ছোটবেলায় ঠাকুর দেখার একটা নেশা ছিল, যে প্রতিটি প্যান্ডেলে যাব, ঠাকুর দেখব। বিশেষ করে ভিড়ের মধ্যে ঢুকে লাইন দিয়ে দিয়ে ঠাকুর দেখা। আর ছোটবেলায় এক মাত্র এই সময়টাতেই বেশ রাত অবধি বা গোটা রাতই বাড়ির বাইরে থাকা যেত। সেই অনুমতি থাকত। ওটা নিয়ে একটা আলাদা উত্তেজনা থাকত। এখন বড় হয়ে যাওয়ার পর তো বাড়ির সেই চাপটা নেই। যখন খুশি বেরোতে পারি, ঘুরতে যেতে পারি। তাই ওটা খুব মিস করি যে ছোটবেলায় প্রথম রাতে ঘোরার অনুমতি পাওয়ার বিষয়টা।”
প্যান্ডেল হপিং হোক বা না হোক, আড্ডা তো হবে। আর তা ছাড়াও পুজোর দিন মানেই তো নতুন জামা পরা চাই চাই-ই তার জন্য কি কেনাকাটা হয়েছে? প্রশ্ন শুনেই সুহোত্র বলেন, “না না, কেনাকাটা কিছুই হয়নি। আমার না আসলে ওরম ভাবে কেনাকাটা করা হয় না যে পুজোর আগে পুজোর জন্য কেনাকাটা করব। সারা বছরই চলে আমার। যখন যেটা পছন্দ হয় কিনে ফেলি। কিন্তু পুজোর জন্য সেই অর্থে এখনও কিছু কেনা হয়নি।”
আর পুজোর প্রেম? সেটা নিশ্চয় কখনও না কখনও জীবনে এসেছে? তাতে অবশ্য সম্মতি মিলল। জানালেন বিষয়টা ঘটেছে। ‘বাপিবাবু’ বলেন, “ওই প্রেমগুলি চোখে চোখে হতো। আমার ছোটবেলার অনেকটা সময় মামাবাড়ির আবাসনে কেটেছে। সেখানে সবারই পরিবারের লোকজন আসত। সেখানে অনেক নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। চোখে চোখে প্রেম হয়েছে। পঞ্চমীতে প্রথম দেখা, ষষ্ঠীতে চোখাচুখি হওয়া, সপ্তমীতে হাসা, অষ্টমীতে পাশাপাশি বসা, নবমীতে একটু কথা বলা আর দশমীতে শেষ হয়ে ভাসানের পর একাদশীতে আর তার সঙ্গে কোনও দেখা নেই। দেখতে পাচ্ছি না। সেও বাড়ি চলে গেছে, আমিও বাড়ি ফিরে আসতাম। এ সব তো হয়েছেই।” পুজো প্রেমের সঙ্গে নিশ্চয় জমিয়ে খাওয়া-দাওয়াও হয়ে এসেছে এই সময় বরাবর? এই বিষয়ে আর চার পাঁচজন বাঙালির মতোই সুহোত্র মনে করেন এই সময় ডায়েট মেনে চলা পাপ। তাঁর কথায়, “পুজো মানেই বাঙালিদের কাছে ডায়েট না মেনে খাওয়া। সেটা তো হতেই থাকে। রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া। গাড়ি নিয়ে দূরে কোথাও যাওয়া খেতে এ সবই হয়ে থাকে।”
পরিশেষে এই অশান্ত সময়ে দেবীর কাছে কী চাইবেন জানতে চাইলে তিনি তাঁর সহনাগরিকদের জন্যই প্রার্থনা করবেন বলে জানালেন। বললেন, “দেবীর কাছে প্রার্থনা থাকবে যে পৃথিবীটা যেন একটু শান্ত হয়। চারিদিকে এত যুদ্ধ, এত ঘর ছাড়া মানুষ। প্যালেস্টাইনের মানুষরা আজও জানে না যে তাঁরা আগামীকালের সকাল দেখতে পারবে কিনা। আমাদের দেশেও চারপাশে কত সমস্যা, শিক্ষকরা রাস্তায় বসে আছেন, যা যা ঘটছে আরও... মানুষ আজকাল যেন বেশিই অধৈর্য হয়ে পড়ছে। তারা খুব শীঘ্রই ঘৃণা ছড়ায় এমন কথা বলছে। তাই চাই মানুষের মন যেন শান্ত হয়, তারা যেন একটু সহানুভূতিশীল হয় যাতে কেউ পড়ে গেলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।