পুজো মানেই তো নতুন শাড়ি, নতুন পাঞ্জাবি আর সাজগোজের ঢল। ষষ্ঠী থেকে দশমী, ঠাকুর দেখতে বেরোনো থেকে পাড়ার মণ্ডপ— সব জায়গাতেই ঝলমলে থাকার একটা ইচ্ছে থাকে। কিন্তু এ বারের পুজোয় সঙ্গে ভিজে আবহাওয়া আর বৃষ্টির একটা আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে। মেকআপ অক্ষত রাখাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে সে ক্ষেত্রে। কিন্তু যদি বলি, বৃষ্টিতেও আপনার সাজ থাকবে নিখুঁত? এর জন্য কিছু ছোটখাটো টিপ্স মেনে চললেই হবে!
১। প্রথমেই, ভারী মেকআপ বাদ দিয়ে বেছে নিন জল-নিরোধক উপকরণ যা দীর্ঘ ক্ষণ টিকে থাকে। মেকআপ শুরু করার আগে মুখটা ভাল করে পরিষ্কার করে নিন। মুখ ধোওয়ার পরে একটি ভাল টোনার ব্যবহার করুন, যা ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখবে। এ বার হালকা ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে মিনিট পাঁচেক অপেক্ষা করুন। এতে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী হবে।
২। মেকআপের প্রথম ধাপ হল প্রাইমার। বৃষ্টির দিনে ওয়াটারপ্রুফ প্রাইমার ব্যবহার করলে রূপটানের স্থায়িত্ব অনেকটাই বেড়ে যায়। ফাউন্ডেশনের ক্ষেত্রে ম্যাট ফিনিশের ওয়াটারপ্রুফ ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা ভাল। বেশি ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। বিবি ক্রিম বা সিসি ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ত্বকের সঙ্গে মিশে গিয়ে একটা প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা দেবে।
৩। চোখের সাজের দিকেও নজর দেওয়া জরুরি। বর্ষার সময়ে আইশ্যাডো বা আইলাইনার সহজে উঠে যায়। এর জন্য ওয়াটারপ্রুফ আইলাইনার এবং মাসকারা বেছে নেওয়া উচিত।
৪। লিপস্টিকের জন্য ম্যাট লিপস্টিক উপযুক্ত। যদি গ্লসি লিপস্টিক ব্যবহার করতে মন চায়, তবে তার উপরে হালকা পাউডার দিয়ে সেট করে নেওয়া যেতে পারে।
৫। পুজোয় ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সময়ে মুখে একটা গোলাপি আভা বা সূর্যের নরম আলোয় পোড়া ভাব (যাকে বলে ব্রোঞ্জার) না থাকলে যেন সাজটাই অসম্পূর্ণ লাগে। কিন্তু বর্ষার দিনে পাউডার ব্লাশ সহজেই ভিজে বা ঘামে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এই সময়ে ক্রিম অথবা লিক্যুইড ব্লাশ ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ। এটি সহজেই ত্বকে মিশে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে একটা স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।
৬। ভ্রু হল মুখের কাঠামো, যা আপনার সাজকে সম্পূর্ণ করে তোলে। পুজোর সময়ে অনেকেই নানা রকম সাজে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। কিন্তু ভ্রু ঠিকঠাক না থাকলে সবটাই মাটি! বর্ষার ভিজে আবহাওয়ায় ভ্রু-এর সাজ ঠিক রাখা কঠিন। তাই এই সময়ে ভ্রু-এর জন্য জেল বা ওয়াক্স ব্যবহার করা জরুরি। এটি আপনার ভ্রু-র প্রতিটি চুলকে সঠিক আকারে ধরে রাখবে এবং সারা দিন ধরে নিখুঁত থাকবে।
৭। চোখের নীচের কালি বা হালকা বলিরেখা অনেক সময়ে সাজকে ম্লান করে দেয়। পুজোর কয়েকটা দিন তো আর কোনও ক্লান্তি বা মলিনতা মুখে ধরে রাখা যায় না।
৮। মেকআপ শুরুর আগে চোখের নীচে হালকা কনসিলার ব্যবহার করে এই দাগগুলো ঢেকে দিন। এটা শুধু চোখের নীচের কালিই লুকোবে না, বরং চোখকে আরও বড় আর উজ্জ্বল করে তুলবে। এতে আপনার চোখ দুটো আরও প্রাণবন্ত মনে হবে। উৎসবের আনন্দও চোখে-মুখে ফুটে উঠবে।
৯। পুরো মেকআপ হয়ে গেলে মেকআপ সেটিং স্প্রে ব্যবহার করুন। এটি মেকআপকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখবে। সঙ্গে ব্যাগেই থাকুক একটি ফেস মিস্ট। যখনই মন চাইবে বা ত্বক শুষ্ক লাগবে, হালকা করে স্প্রে করে নিতে পারেন। এটা আপনাকে সতেজ রাখবে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।