প্রতীকী চিত্র
দরজায় কড়া নাড়ছে পুজো। সাজগোজের তালিকায় শাড়ি, গয়না, মেকআপের পাশাপাশি অনেকেরই নতুন রঙে চুল রাঙিয়ে নেওয়ার সাধ জাগে। নতুন জামাকাপড়, মেকআপের সঙ্গে চুলের রং বদলও অনেকের কাছে এক নতুন ট্রেন্ড। বিশেষত যখন তারকারা নিত্যনতুন কেশসজ্জা বা চুলের রঙে চমক দেখান, সেই ঢেউ যথারীতি সাধারণের গায়েও এসে লাগে। কিন্তু উৎসবের এই উন্মাদনায় অনেকেই ভুলে যান, এই ঝকঝকে রঙের আড়ালে কী কী বিপদ লুকিয়ে আছে।
চুলে রাসায়নিক-যুক্ত রং লাগালে এক দিকে যেমন নতুন রঙে রঙিন হয়ে ওঠে, অন্য দিকে লুকিয়ে থাকে একাধিক ক্ষতির আশঙ্কা। চুল রাঙাতে যে রাসায়নিক-নির্ভর রং ব্যবহার করা হয়, তাতে থাকে অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, পিপিডি-র মতো উপাদান। বারবার এই ধরনের রাসায়নিকের সংস্পর্শে এলে চুল তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারাতে পারে, যার ফলে চুল রুক্ষ ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে, মাথার ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। এমনকী আরও ভয়ঙ্কর দিক হল, কিছু গবেষণা বলছে– এই রাসায়নিক উপাদানগুলি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। তাই যাঁদের সংবেদনশীল ত্বক বা গর্ভাবস্থা রয়েছে, কিংবা শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের এই রং থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।
তা হলে কি আর পুজোর সাজে রঙিন চুল পাওয়া সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব! প্রকৃতিই দিয়েছে এর সহজ সমাধান। রাসায়নিকের ক্ষতি ছাড়াই চুলে রঙিন ছোঁয়া আনা যাবে ঘরোয়া উপায়ে। যেমন, কন্ডিশনারের সঙ্গে দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে লাগালে চুলে গোলাপি-লালচে আভা আসতে পারে।
লেবুর রস ও জল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রোদে শুকোলে চুলে হালকা হাইলাইট পাওয়া যায়।
ক্যামোমাইল চায়ের লিকার স্প্রে করলে চুলে একটি সোনালি আভা আসে, যা উৎসবের মেজাজকে আরও বাড়িয়ে তোলে। আর যারা কালো ও ঝলমলে চুল চান, তারা গরম চা বা লাল চা দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে পারেন।
পুজোর আগে সাজগোজের এই পালাবদলে নিজেকে সুন্দর দেখানোর পাশাপাশি চুলের যত্নও নেওয়া জরুরি। চুলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাসায়নিক রঙের আকর্ষণ থেকে বেরিয়ে এসে পুজোয় বেছে নেওয়া যেতে পারে প্রাকৃতিক এই উপায়গুলি।
পুজোর দিনে নতুন রঙে ঝলমল করুক সাজ। কিন্তু ক্ষতি নয়, সুরক্ষাই হোক অগ্রাধিকার।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।