মঙ্গলবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া ঝমঝম বৃষ্টিতে জলমগ্ন উত্তর কলকাতার হাতিগবান বাজার ও আশপাশের বাজার এলাকা।
হাঁটু থেকে কোমর সমান জল জমে রাস্তা দিয়ে চলা দায় হয়েছে। শহর জুড়ে জলাবদ্ধতায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে ৫–৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বৃষ্টির জল আর ড্রেনের নোংরা জল মিলেমিশে একাকার। দোকানের ভিতরে জল ঢুকে পড়ায় যেন পুজোর মুখে ভেসে গেল হাজারো স্বপ্ন।
যে সমস্ত দোকানদার দুর্গাপুজো উপলক্ষে নতুন পণ্য তুলেছিলেন, তাঁদের মাথায় এখন হাত। বিপুল অঙ্কের জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে। জলমগ্ন দোকানে দাঁড়িয়ে শুধু হা-হুতাশ করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই তাঁদের।
এই বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে সারা কলকাতা জুড়েই। নিউ মার্কেট থেকে গড়িয়াহাট, প্রায় সব বাজারেই থমকে গেছে বিকিকিনি। এমনিতেই মহালয়ার আগে কেনাকাটার ভিড় ছিল কম। তার উপর এই বৃষ্টিতে ক্রেতার সংখ্যা আরও কমেছে।
মেট্রো পরিষেবাও আংশিক বন্ধ থাকায় শহরের জীবনযাত্রায় বড়সড় প্রভাব পড়েছে।
কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। জল নামাতে ম্যানহোল খোলা, স্রোত চালু রাখা এবং লক-গেট নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হচ্ছে। এই জল যত ক্ষণে নামবে, তত ক্ষণে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সামনে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই আশঙ্কায় হাতিবাগানের ব্যবসায়ীরা চিন্তায় রাতের ঘুম হারিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর আবারও এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাঁদের ব্যবসার মেরুদণ্ড ভেঙে দিল।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও ভয়াবহ। দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতায় কয়েক ঘণ্টায় ২৫০–৩৩০ মিমি পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। উত্তর কলকাতার ঠনঠননিয়ায় প্রায় ১৯৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)