প্রতীকী চিত্র।
দুর্গোৎসব মানেই বাঙালির থোড়-বড়ি-খাড়া জীবনে এক আনন্দের ঢেউ। নতুন পোশাকে সেজেগুজে বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে ঠাকুর দেখা বাঙালি বাড়ির এক চিরন্তন ঐতিহ্য। কিন্তু তুমুল ভিড়ের মধ্যে ঠাকুর দেখা অনেক সময়েই ক্লান্তিকর ও অসুবিধাজনক হতে পারে। তা আরামদায়ক এবং উপভোগ্য করে তোলার জন্য কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। রইল তারই তালিকা।
১. আরামদায়ক পোশাক এবং জুতো পরা
পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরোলে আরামদায়ক পোশাক এবং জুতো পরাটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। পোশাক এমন পরুন, যা গরম বা ভিড়ের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করবে না। হালকা এবং সুতির পোশাক সবথেকে ভাল। খেয়াল রাখুন, নতুন পোশাক পরলেও তা যেন আরামদায়ক হয়। সেই সঙ্গে, আরামদায়ক জুতোও খুবই জরুরি। সারাদিন হাঁটাহাঁটির ইচ্ছে থাকলে স্লিপার বা ফ্ল্যাট স্যান্ডেল পরা যেতে পারে। উঁচু হিলের জুতো এড়িয়ে চলুন। কারণ তাতে পায়ে ব্যথার আশঙ্কা থাকে। জুতো খুব বেশি আঁটোসাঁটো হলে পায়ে ফোস্কাও পরতে পারে।
২. সঠিক সময় নির্বাচন
ভিড় এড়িয়ে ঠাকুর দেখার জন্য সঠিক সময় বেছে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। সাধারণত সকালের দিকে প্যান্ডেলগুলিতে ভিড় তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। তাই সকালের দিকে ঠাকুর দেখতে বেরোলে শান্ত ভাবে প্রতিমা এবং মণ্ডপের শিল্পকর্ম উপভোগ করা যায়। যদি ভিড় এড়িয়ে চলতে চান, তা হলে ষষ্ঠী, সপ্তমী বা অষ্টমীতে সকালের দিকেই ঠাকুর দেখা ভাল। পুজোর দিনগুলোয় রাতে বা দশমীর দিনে বিসর্জনের আগে সাধারণত প্রচুর ভিড় হয়।
৩. খাবার এবং পানীয় সঙ্গে রাখা
সারাদিন ঘোরাঘুরির সময়ে এনার্জি বজায় রাখতে খাবার এবং পানীয় সঙ্গে রাখা জরুরি। এই সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিহাইড্রেশন এড়াতে একটি জলের বোতল এবং কিছু গ্লুকোজ বা এনার্জি ড্রিঙ্ক সঙ্গে রাখতে পারেন। সেইসঙ্গে, চিপস, বিস্কুট বা হালকা কোনও খাবারও, যা তাৎক্ষণিক এনার্জি দেবে। অতিরিক্ত মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল।
৪. যাতায়াত পরিকল্পনা
পুজোর সময়ে যানজট এড়াতে যাতায়াতের পরিকল্পনা আগে থেকেই করে নিন। সম্ভব হলে ব্যক্তিগত গাড়ির বদলে মেট্রো বা লোকাল ট্রেন ব্যবহার করুন। এতে যানজট এড়িয়ে তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারবেন। আবার, অনেক সময়ে কিছু কিছু মণ্ডপ একেবারে কাছাকাছি থাকে। সে ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট রুটের পরিকল্পনা করে হেঁটেই ঠাকুর দেখতে পারেন। আর যদি রাইড-শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার করেন, তবে খেয়াল রাখবেন পুজোর সময়ে ভাড়া অনেক বেড়ে যায়। সেই অনুযায়ী আগাম বাজেট করে রাখুন।
৫. প্রয়োজনীয় সামগ্রী সঙ্গে রাখা
ঠাকুর দেখতে বেরোলে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাদ দিয়ে শুধু প্রয়োজনীয় সামগ্রী সঙ্গে রাখুন। সঙ্গে খুব বেশি নগদ টাকা না রেখে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড রাখতে পারেন। এ ছাড়াও, কিছু পেমেন্ট অ্যাপ (যেমন - গুগল পে, ফোনপে, পেটিএম ইত্যাদি) ব্যবহার করা যেতে পারে। বিভিন্ন মণ্ডপে ঘোরাঘুরির সময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা খুব জরুরি। তাই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের একটি ছোট বোতল সঙ্গে রাখুন। একইসঙ্গে, সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য একটি ছোট ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন, যা বহন করা সহজ এবং নিরাপদ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।