দুর্গাপুজোর সময় চুলের হরেক কায়দা মাস্ট! কিন্তু, উৎসবের কেশসজ্জায় অনেকেই রোজ চুলে অতিরিক্ত তাপের ছোঁয়া দেন। যেমন - হেয়ার ড্রায়ার, স্ট্রেটনার বা কার্লিং আয়রন। এর ফলে কিন্তু চুলের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। চুল হয়ে ওঠে রুক্ষ, শুষ্ক এবং প্রাণহীন। চলুন, জেনে নিই কী ভাবে পুজোর সময়ে হেয়ার স্টাইলিং করেও চুলের যত্ন নেওয়া সম্ভব এবং অতিরিক্ত তাপের সংস্পর্শে চুলের কী কী সমস্যা হতে পারে।
স্টাইলিংয়ের জন্য তাপ, ক্ষতি কতটা? পুজো মানেই নিত্যনতুন স্টাইল। তার জন্য চুলে তাপ ব্যবহার করা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু, অতিরিক্ত তাপে চুল তার প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারায়। যার ফলে চুল হয়ে ওঠে রুক্ষ ও ভঙ্গুর। চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
প্রথম সমস্যা - চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া: নিয়মিত হিট টুলের ব্যবহার চুলের বাইরের কিউটিকল স্তর নষ্ট করে দেয়। ফলে চুল তার স্বাভাবিক তৈলাক্ততা এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না। যার জেরে চুল হয়ে যায় রুক্ষ ও শুষ্ক। দেখতেও একেবারেই ভাল লাগে না।
দ্বিতীয় সমস্যা - চুল ফেটে যাওয়া: বাড়তি তাপের কারণে চুলের প্রোটিন কাঠামো ভেঙে যায়। এতে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং খুব সহজেই ফেটে যায়। বিশেষ করে চুলের ডগা ফেটে যাওয়া বা 'স্প্লিট এন্ডস' একটি বড় সমস্যা।
তৃতীয় সমস্যা - চুলের রং নষ্ট হয়ে যাওয়া: যাঁরা চুলে রং করিয়েছেন, তাঁদের জন্য এই অতিরিক্ত তাপ আরও বেশি ক্ষতিকর। তা চুলের রঙের পিগমেন্ট নষ্ট করে দেয়। ফলে চুলের রং দ্রুত হালকা হয়ে যায় এবং তার উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে।
চুলের যত্নে প্রথম ধাপ - হিট প্রোটেক্ট্যান্ট স্প্রে: যে কোনও হিট টুল ব্যবহারের আগে অবশ্যই ভাল মানের হিট প্রোটেক্ট্যান্ট স্প্রে ব্যবহার করুন। এটি চুলের উপর একটি সুরক্ষা-স্তর তৈরি করে। যা সরাসরি তাপ থেকে চুলকে বাঁচায়।
দ্বিতীয় ধাপ - তেল এবং হেয়ার মাস্ক: পুজোর আগে থেকেই চুলের যত্ন নেওয়া শুরু করুন। সপ্তাহে অন্তত দু’বার হট অয়েল ম্যাসাজ করুন। পুজো শুরু হলে অন্তত দু’দিন অন্তর হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন। নারকেলের দুধ, মধু এবং ডিমের মাস্ক খুব উপকারী।
তৃতীয় ধাপ - সঠিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার: সালফেটমুক্ত শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এই ধরনের শ্যাম্পু চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে না। কন্ডিশনার চুলে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাই অবশ্যই শ্যাম্পু করার পরে কন্ডিশনার লাগান।
চতুর্থ ধাপ - হেয়ার স্টাইলিংয়ের বিকল্প: প্রতিদিন তাপ ব্যবহার না করে কিছু বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করুন। রাতে চুল বেঁধে ঘুমানো বা কার্লিং রোলার ব্যবহার করে চুলের কার্ল করা যায়। এ ছাড়া, বিভিন্ন ধরনের বিনুনি বা খোঁপা করে চুলের স্টাইল করতে পারেন।
পঞ্চম ধাপ - চুলকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন: পুজোর কয়েকটি দিন না হয় হিট দিলেন। কিন্তু, তার পরে চুলকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন। এই সময়ে হিট টুল থেকে দূরে থাকুন। চুলকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পুষ্টি ও আর্দ্রতার জোগান দিন। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।