প্রতীকী চিত্র
পুজোর আর ক’টা দিন বাকি। এই সময়টায় শহরের আকাশে পেঁজা তুলোর মতো সাদা মেঘ ভেসে বেড়ানোর কথা। কিন্তু মঙ্গলবার ভোর থেকে বৃষ্টিতে সেই চেনা ছবিটাই গেল পাল্টে। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে সারা রাত ধরে ঝমঝমিয়ে ঝরেছে জল। আর তাতেই উৎসবের শহরটা যেন হঠাৎ থমকে দাঁড়াল। শহরের আনাচে-কানাচে উপচে পড়া জল, কোথাও হাঁটু জল তো কোথাও কোমর পর্যন্ত। সাধারণ মানুষের নাকাল দশা।
সব চেয়ে বেশি ভুগতে হয়েছে অফিস যাত্রীদের। মেট্রো পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। শহীদ ক্ষুদিরাম থেকে ময়দান পর্যন্ত মেট্রো চলাচল বন্ধ। অফিস টাইমে এমন সমস্যায় পড়ে যাত্রীদের মাথায় হাত। যাঁরা বাসে করে অফিসে যাবেন ভেবেছিলেন, তাঁরাও দেখেন বাস রাস্তার মাঝখানে থমকে আছে। উপায় না দেখে অনেকে অ্যাপ-ক্যাবের দিকে ঝুঁকলেও সেখানেও সমস্যা। সাধারণত যে রুটের ভাড়া লাগে ৩০০-৪০০ টাকা, সেই একই রুটের ভাড়া আকাশ ছুঁয়ে ১০০০-১২০০ টাকা। কিন্তু এই গলা কাটা ভাড়াও অনেক সময় কাজে আসেনি। জলমগ্ন রাস্তা দেখে চালকরাও যাত্রা বাতিল করে দিয়েছেন। ভবানীপুর বা আলিপুরের মতো অভিজাত এলাকাতেও গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শুধু মেট্রো আর রাস্তাই নয়, জল ঢুকেছে অনেক স্কুলেও। তাই শেষ মুহূর্তে বাতিল করতে হয়েছে পরীক্ষা। অনেক অভিভাবক রাত ৩টে-৪টের সময় মেসেজ পেয়েছেন যে পরীক্ষা হচ্ছে না। তাঁদের চিন্তা, এই পরীক্ষা আবার কবে হবে!
সব চেয়ে বড় চিন্তা, জলমগ্ন শহরের এই পরিস্থিতি যেন পুজোর আনন্দকে ম্লান করে না দেয়। কারণ এই বৃষ্টির জেরে অনেক মণ্ডপের বিদ্যুতের কাজও অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছে। মণ্ডপের আশেপাশে জমা জলে খোলা তারের কারণে বেড়েছে শর্ট সার্কিট এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি। ইতিমধ্যেই এমন ঘটনায় মৃত্যুও হয়েছে কয়েক জনের।
পুজোর আগে বৃষ্টির কারণে শহরের এই দুর্ভোগের ছবিটা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এই উৎসবের মরসুমে এমন পরিস্থিতি কলকাতার মানুষদের ভোগান্তি বাড়াবে। পুজোর কয়েক দিন আগে এমন জল থইথই শহর দেখে অনেকের মুখেই চিন্তার ছাপ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।