দুর্গাপুজো বাঙালির কাছে শুধু উৎসব নয়, বরং পুরোদস্তুর আবেগ। কাজের তাগিদে অনেকেই এখন বিদেশে থাকেন, যেখানে পুজোর এই উৎসবের আমেজ সে ভাবে অনুভব করা যায় না।
ভীষণ মন খারাপ হয়, তাই না? কিন্তু বিদেশে থেকেও যদি ছড়িয়ে যায় পুজো-পুজো অনুভূতি? তার জন্য নিজের ঘরটাকে শারদীয়ার আমেজের মানানসই করে সাজিয়ে তুলতে হবে। কিছু সহজ এবং সৃজনশীল উপায়ে প্রবাসের ঘরও কিন্তু হয়ে উঠতে পারে এক টুকরো বাংলা।
১. রঙের ব্যবহার পুজোর অন্যতম প্রধান উপাদান উজ্জ্বল রং। ঘর সাজাতে লাল, হলুদ, সোনালি, কমলা এবং সাদা রংকে প্রাধান্য দিন। সাদা এবং লাল: বাঙালি ঐতিহ্যে এই দুই রঙের গুরুত্ব অপরিসীম। সাদা ও লাল রঙের পর্দা, কুশন বা বিছানার চাদর ঘরে এনে দেবে উৎসবের আমেজ।
সোনালি রং: উদযাপনের জৌলুস বাড়াতে সোনালি রঙের টেবিল রানার বা মোমদানি ব্যবহার করতে পারেন।
২. আলোর ব্যবহার পুজো মানেই আলোর রোশনাই। বিভিন্ন ধরনের আলোয় ঘর সাজিয়ে প্রবাসের ঘরেই আনুন শারদীয়ার মেজাজ।
ফেয়ারি লাইটস: হলুদ রঙের ছোট ছোট ফেয়ারি লাইট দিয়ে ঘরের দেওয়াল, জানলা বা বারান্দা সাজান।
লণ্ঠন এবং মোমদানি: দেশীয় ধাঁচের ছোট ছোট মাটির লণ্ঠন বা মোমদানি ঘরের কোণে বা টেবিলের উপর রেখে তৈরি করুন নরম আলোর পরিবেশ।
৩. ফুল দিয়ে সাজান ফুল ছাড়া কোনও উৎসবই সম্পূর্ণ হয় না। পুজোর দিনে টাটকা ফুলের সুবাস এক অন্য রকম অনুভূতি এনে দেয়।
জবা এবং বেলপাতা: বিদেশে জবা ফুল পাওয়া কঠিন হতে পারে। তবে যদি সম্ভব হয়, দুর্গাপুজোর আমেজ আনতে জবা ফুল ব্যবহার করতে পারেন। গাঁদা এবং রজনীগন্ধা: এই ফুলগুলো সহজে পাওয়া যায় এবং এদের মালা দিয়ে দরজার ফ্রেম বা জানলা সাজাতে পারেন।
৪. বাংলার ঐতিহ্যবাহী বা সাবেক জিনিসপত্রের ব্যবহার কিছু ছোট ছোট জিনিসপত্র আপনার ঘরের পুজোর সাজকে সম্পূর্ণ করে তুলতে পারে। শঙ্খ এবং ঘণ্টা: ঘরের এক কোণে একটি ছোট শঙ্খ এবং ঘণ্টা রাখুন। সন্ধ্যায় শাঁখ বা ঘণ্টা বাজিয়ে সহজেই পুজোর অনুভূতি পাবেন।
পটচিত্র বা মাটির জিনিস: ছোট ছোট মাটির মূর্তি, পটের ছবি বা বাঙালি লোকশিল্পের কোনও ছোট জিনিসপত্র দিয়ে ঘরের তাক বা টেবিল সাজান।
৫. থিম ভিত্তিক সাজসজ্জা আরও খানিকটা সৃজনশীল হতে চান? তা হলে আপনার ঘরেই একটি ছোট দুর্গাপুজোর থিম তৈরি করতে পারেন। ছোট প্রতিমা: যদি সম্ভব হয়, একটি ছোট দুর্গা প্রতিমা বা তার ছবি দিয়ে ঘরের একটি কোণ সাজিয়ে পুজোমণ্ডপের মতো তৈরি করতে পারেন।
ধুনুচি: পুজোতে ধুনুচির ব্যবহার খুবই প্রচলিত। ছোট ধুনুচি সাজিয়ে তাতে ধুনো জ্বালিয়ে একটা আধ্যাত্মিক পরিবেশ তৈরি করাই যায়।
এই ছোট ছোট টিপসগুলো অনুসরণ করে দূর প্রবাসেও নিজের ঘরটাকে পুজোর আনন্দে ভরিয়ে তুলতে পারবেন। শুধু পুজোর সাজ নয়, বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানিয়ে একসঙ্গে আড্ডা, গান এবং খাওয়া-দাওয়ায় জাঁকিয়ে বসুক শারদীয়ার আমেজ। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।