প্রতীকী চিত্র
সারা বছর যেমন তেমন, মহালয়া মানেই ভোর চারটেয় উঠে রেডিয়ো চালানো চাই অধিকাংশ বাঙালির। কলকাতার বাইরে থাকলে আজকাল ইউটিউব-ই ভরসা অনেকের কাছে। কিন্তু তবুও এই দিনটি ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ না শুনলে যেন সেটা সম্পূর্ণ হয় না। আর ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ এবং যে মানুষটি আজ সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি হলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। তাঁর কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ গায়ে কাঁটা দেওয়ায়।
কিন্তু কায়স্থ হয়ে তিনি কী ভাবে চণ্ডীপাঠ করবেন? দারুণ আপত্তি এসেছিল গোঁড়া হিন্দুদের থেকে। কিন্তু সে সব কিছুকে পাত্তা দেননি বাণীকুমার। তিনি আস্থা রেখেছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের উপরেই।
ষাটের দশকের একদম গোড়ার দিক পর্যন্ত সরাসরি সম্প্রচার হতো এই প্রভাতী অনুষ্ঠানের। তখনও রেকর্ড চালানোর চল আসেনি। মহালয়ার আগের দিন রাতে ১ নম্বর গার্স্টিন প্লেসেই থেকে যেতেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র। সেখানেই নিজেকে প্রস্তুত করতেন এই অনুষ্ঠানের জন্য।
ভোর ভোর স্নান সেরে গরদের ধুতি পাঞ্জাবি পরে বসতেন চণ্ডীপাঠে। বাকিটা তো আজ ইতিহাস।
তবে জানেন কি, এক বার বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র সুরেলা কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ করতে করতে বাংলা ভাষ্যের অংশও নিছক মজা করে সুরেলা কণ্ঠেই পাঠ করে বসেন। সেটা শুনে বাকিরা হেসে উঠলেও বিষয়টা ভাল লাগে বাণীকুমারের। তিনি নির্দেশ দেন সেই ভাবেই ভাষ্য পাঠ করতে। বর্তমানে আপামর বাঙালি সে ভাবেই ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র ভাষ্য পাঠ শুনতে পায়।
এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভাল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতের শিক্ষা পেয়েছিলেন তাঁর ঠাকুমা যোগমায়া দেবীর কাছে। মাত্র ৮ বছর বয়সে সকলকে চণ্ডীপাঠ করে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ৪০-৫০ পাতার কবিতাও অনায়াসে মুখস্থ বলতে পারতেন তিনি, এতটাই প্রখর ছিল তাঁর স্মৃতি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।