Is Mahalaya Auspicious or not

সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভ-অশুভের দ্বৈরথ, মহালয়ায় কি শুভেচ্ছা জানানো যায়?

মহালয়া শুভ নাকি অশুভ, ফি বছর সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় তর্ক। কিন্তু সব তিথিকে কি কেবল শুভ, অশুভের পরিচয়ে আটকে রাখা যায়? শুভ না বললেও কেন একেবারে অশুভ আখ্যাও দেওয়া যায় না মহালয়াকে?

Advertisement

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:০৪
Share:

প্রতীকী চিত্র

মহালয়ার ভোরে বেতারে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর বেজে ওঠা মানে উমা আসছেন। বাঙালির কাছে মহালয়া মানেই দেবী দুর্গার আগমন। পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনার সন্ধিক্ষণ এই মহালয়া। কিন্তু এই দিনে কি শুভেচ্ছা জানানো যায়? মহালয়া শুভ নাকি অশুভ– প্রতি বছর সমাজমাধ্যমে তা নিয়ে শুরু হয় জোর লড়াই।

Advertisement

মহালয়া হল পিতৃতর্পণের তিথি। পিতৃপক্ষের এই এক পক্ষকাল পিতৃপুরুষরা মর্ত্যলোকে চলে আসেন। তাই পিতৃপক্ষে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ তর্পণ করে মানুষ। শাস্ত্রে অবশ্যপালনীয় পঞ্চমহাযজ্ঞের বিধানের অন্যতম হল পিতৃতর্পণ। তবে কেবল পিতৃপুরুষের উদ্দেশে নয়, সর্বভূতের উদ্দেশেই তর্পণ করতে হয়। পিতৃপক্ষের শেষ দিনটিতে অর্থাৎ মহালয়ায় পিতৃপুরুষকে জলদান ও তিলদান করা হয়, যা পিতৃশ্রাদ্ধের সমতুল। শ্রাদ্ধের তিথি হল শোকের দিন। তা কি কখনও শুভ হতে পারে?

আবার মহালয়ায় পিতৃপক্ষের অবসানের পরে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের বার্তা বয়ে আনা তিথিটি কি অশুভ হতে পারে? কথিত, এই তিথিতে মহিষাসুর নিধনের দায়িত্ব নেন দেবী দুর্গা। তা না হলে ত্রিলোক রক্ষা পেত না। শাস্ত্রমতে, যে কোনও শুভ কাজের শুরুতে পিতৃপুরুষকে স্মরণ করা হয়। বিয়ের ক্ষেত্রেও চোদ্দো পুরুষকে স্মরণ করা হয়। যে পিতৃতর্পণ পঞ্চমহাযজ্ঞের অন্তর্গত, তাকে অশুভ বলেও দেগে দেওয়া যায় না।

Advertisement

শুভ ও অশুভের দ্বন্দ্ব আসলে অনেকটাই আপেক্ষিক, ব্যক্তি-ভাবনার উপর নির্ভরশীল। সব তিথিকে নিছক শুভ, অশুভের পরিচয়ের মোড়কে বেঁধে ফেলাও ঠিক নয়। পিতৃপুরুষকে স্মরণ করাই মহালয়ার আদত তাৎপর্য। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, বাণীকুমার, পঙ্কজ মল্লিকদের সৃষ্টি, প্রতিমার চক্ষুদানের লোকাচার মহালয়া দিনটির নবনির্মাণ করেছে। দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম, তাকে যে যেমন ভাবে ইচ্ছে দেখতে পারে, উদ্‌যাপন করতে পারে। আম বাঙালি একে উৎসবের সূচনাকাল হিসেবে দেখে। ইদানীং মহালয়ার পরদিন থেকে ঠাকুর দেখা শুরু হয়ে যায়। জনমতকে উপেক্ষা করার অর্থ সময়কে, সময়ের দাবিকে অগ্রাহ্য করা। সময়ের দাবিকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement