উত্তর কলকাতার নিমতলা ঘাট স্ট্রিটের পাশেই জোড়াবাগান থানার পুরনো পরিত্যক্ত ভবনটি এক রহস্যময় ইতিহাস বহন করে চলেছে! এক কালের প্রাসাদ, পরে কলেজ এবং সব শেষে থানায় রূপান্তরিত হওয়া এই বাড়িটিকে ঘিরে রয়েছে নানা ভৌতিক কাহিনি ও কিংবদন্তী।
বিশাল এই ভবনটি মূলত বাবু মথুরমোহন সেনের সম্পত্তি ছিল। ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকে এটি ছিল উত্তর কলকাতার অন্যতম জমকালো এবং বিশাল প্রাসাদগুলির অন্যতম।
পরবর্তীতে বাড়িটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়। বিখ্যাত স্কটিশ ধর্মপ্রচারক আলেকজান্ডার ডাফের প্রতিষ্ঠিত ফ্রি চার্চ ইনস্টিটিউশন এই ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়।
যার জেরে এই ভবনের নামকরণ করা হয় ডাফ কলেজ। এটি ১৮৪৪ সাল থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র ছিল। ১৯২৯ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজের সঙ্গে মিশে যায় এই কলেজ।
এরও পরে ডাফ কলেজের ভবনটি এক সময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয় এবং ১৯২০-র দশকে এটি জোড়াবাগান থানা হিসাবে ব্যবহার করা শুরু হয়। সেই সময়ে ব্রিটিশ পুলিশের কুখ্যাত অফিসার চার্লস টেগার্ট এই থানার প্রধান ছিলেন।
কথিত, টেগার্ট এই ভবনের একটি অংশকে 'টর্চার চেম্বার' হিসাবে ব্যবহার করতেন এবং সেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবীদের উপর অকথ্য অত্যাচার করা হত। এই অন্ধকার অতীত বাড়িটিকে এক ভয়াবহ কুখ্যাতি এনে দেয়।
১৯৭০-এর দশকে নকশাল আন্দোলনের সময়েও এই থানা সংবাদের শিরোনামে ছিল। এক বার থানার গুদাম ঘরে বাজেয়াপ্ত করা বোমা রাখা হয়েছিল। এক দিন সেই বোমার কার্টনগুলি হঠাৎই ফেটে যায়। এই বিস্ফোরণে ভবনের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেই ঘরে থাকা পুলিশকর্মীরা গুরুতর ভাবে জখম হন। এই মর্মান্তিক ঘটনা বাড়ির অলৌকিক কাহিনির ভিত আরও পোক্ত করে।
বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, ভগ্নদশা ও নিরাপত্তার কারণে ১৯৮৮ সালের কাছাকাছি সময়ে ভবনটিকে ব্যবহারের জন্য অসুরক্ষিত ঘোষণা করা হয় এবং জোড়াবাগান থানাটিকে সামনের ছোট একটি বাড়িতে স্থানান্তরিত করা হয়। পরিত্যক্ত হওয়ার পর থেকেই এর ভৌতিক গল্প এবং গুজব আরও ছড়াতে শুরু করে। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আর্তনাদ, অত্যাচার ও বিস্ফোরণের বীভৎস স্মৃতি।
এই বাড়িতে অলৌকিক কিছু দেখার বা অনুভব করার বহু গল্প প্রচলিত আছে। যার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। এমনকী, অনেকেই রাতের অন্ধকারে এই বাড়ির ভগ্নস্তূপে সাদা আকৃতির ছায়া দেখতে পাওয়ার দাবি করেছেন।
পুলিশকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কিছু লোকজন অদ্ভুত কান্নার আওয়াজ, চিৎকার বা ফিসফিস শব্দ শোনার কথাও বলেছেন। অনেকে এই আওয়াজগুলিকে ব্রিটিশ আমলে অত্যাচারিত বিপ্লবীদের আর্তনাদ বলে মনে করেন। ( ‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’)। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।