'জয় কালী কলকত্তেওয়ালি'! মা কালীর প্রতি এ হেন সম্বোধন অর্থাৎ - তাঁকে 'কলকত্তেওয়ালি' বলার রীতি শুরু হল কী ভাবে? অভিজ্ঞ মহল এর নেপথ্যে নানা কারণ উল্লেখ করে।
প্রচলিত ধারণা অনুসারে, জব চার্নক কলকাতার স্রষ্টা। কিন্তু, একাধিক প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন বলছে, আসলে জব চার্নক আসার বহু আগেই এই বাংলার বুকে কলকাতার অস্তিত্ব ছিল। তবে, তার নাম 'কলকাতা' হয়েছে অনেক পরে।
ইতিহাস বলছে, কলকাতার বয়স অন্তত ২,০০০ বছর! আর, ঠিক ততটাই প্রাচীন এই বসত এলাকার মানুষের কালী সাধনার ঐতিহ্য!
বলা হয়, প্রাচীন কালে গভীর জঙ্গলে অথবা শ্মশানে কেবল মাত্র কালী যন্ত্রে মায়ের সাধনা করতেন তান্ত্রিক সাধকরা।
কিন্তু, কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের হাত ধরে সেই দেবীই হয়ে ওঠেন বাঙালির ঘরের মেয়ে। তাঁকে দক্ষিণা কালী রূপে পুজো করতে শুরু করেন গৃহস্থরা।
বর্তমানে যেখানে কলকাতা অবস্থান করছে, সেই স্থান-সহ গোটা বাংলা এবং সমগ্র ভারতে ক্রমে কালী মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে।
অনুমান করা হয়, কলকাতার নামকরণের নেপথ্যেও রয়েছে এই কালী মাহাত্ম্য! ঐতিহাসিকদের একাংশের মতে, কালীক্ষেত্র শব্দটিই নাকি পরবর্তীতে লোকমুখে হয়ে যায় - কলকাতা!
অর্থাৎ - একে বারে প্রথম থেকেই শহর কলকাতার সঙ্গে মা কালী, কালীর সাধন ভজনের ধারণা জড়িয়ে গিয়েছে ওতপ্রোত ভাবে।
এর থেকে অনুমান করা হয়, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সারা ভারতের মানুষের কাছে কালী ছিলেন কলকাতার - অর্থাৎ - তাঁদের উচ্চারণে - ‘কলকাত্তার’ দেবী!
তথ্যাভিজ্ঞ মহলের একটা অংশ মনে করে, এ ভাবেই কালী হয়ে ওঠেন ‘কলকত্তেওয়ালি’! তাই, আজও সারা দেশে বলা হয় - ‘জয় কালী কলকত্তেওয়ালি’! (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)