অন্ধকার রাত। গা ছমছমে আবহ। আর তার মধ্যেই মোচ্ছব ‘তেনাদের’। ‘ভূতচতুর্দশী’ কথাটি শুনলে ঠিক এমনই চিত্র মনে ভেসে আসে।
কালীপুজোর আগে চতুর্দশী তিথিতেই পালিত হয় এই বিশেষ দিনটি।
যেখানে হিন্দু শাস্ত্র মেনে বাড়িতে জ্বালানো হয় ১৪ প্রদীপ, খাওয়া হয় ১৪ শাক।
কিন্তু কেন? নিয়মনীতি তো মানা হয় সবই। এর নেপথ্যে তাৎপর্য জানেন কি?
ভূতচতুর্দশীর দিন যে ১৪ শাক খাওয়া হয়, তা হল- জয়ন্তী, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, ওল, পুঁই, সর্ষে, বেতো, কালকাসুন্দে, নিম, পলতা, শৌলফ, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা ও শুষণী।
আবার এই শাক ধুয়ে সেই জল ছিটিয়েও দেওয়া হয় বাড়ির প্রতিটি কোণে।
হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয়, এই ভূতচতুর্দশীর দিন মৃত পূর্ব পুরুষেরা মর্ত্যে নেমে আসেন। তাঁদের খুশি করতে এবং অশুভ শক্তি দূর করতেই এই প্রথাগুলি মানা হয়।
বলা হয়, মৃত্যুর পর দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। আর এই পূর্ব পুরুষেরা মিশে থাকেন আকাশ, মাটি, জল, অগ্নি ও হাওয়ায়।
তাঁদের উদ্দেশ্যেই এই ১৪ রকমের শাক উৎসর্গ করা হয়ে থাকে বলে মনে করা হয়।
যদিও এই শাকগুলি খাওয়ার নেপথ্যে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে।
বিজ্ঞান বলে, ঋতু পরিবর্তনের জন্য এই সময়ে নানা ধরনের অসুখ হয়ে থাকে।
এই ১৪ শাক, শরীরের রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
অন্য দিকে, শুধু অশুভ শক্তিকে দূর করতেই নয়, মনে করা হয়, হেমন্তের শুরুরে পোকার উপদ্রব কমাতেও এই ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়ে থাকে।
এ ছাড়া মনে করা হয় এ দিন পূর্বপুরুষেরা মর্তে আসেন। তাই এ দিন বাড়ির চারিদিকে চোদ্দ প্রদীপ দেওয়া হয়।
অশুভ আত্মাকে বাড়ি থেকে দূরে রাখতে, অন্ধকার দূর করতেও এ দিন চোদ্দ বাতি জ্বালানো হয় বলে মনে করেন অনেকে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।