জনশ্রুতি আছে ফি বছর কার্তিক মাসের অমাবস্যায় কালীপুজোয় নাকি নরবলি দিতেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ রঘু ডাকাত।
ওই অমাবস্যার রাতে যিনিই জঙ্গল দিয়ে যেতেন তাঁকেই ধরে এনে বলি দেওয়া হতো বলে কথিত আছে।
এক বছর কার্তিক অমাবস্যার রাতে বাঙালি কবি এবং কালী সাধক রামপ্রসাদ সেন সেখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন।
রামপ্রসাদ সেনের লেখা মা কালীকে নিয়ে ভক্তিগীতি তো আজও সমান জনপ্রিয়।
এই রামপ্রসাদ সেনকে সে বার জঙ্গলের পথে যেতে দেখে তাঁর পথ রোধ করেন রঘু ডাকাত।
হাত পা বেঁধে রামপ্রসাদ সেনকে হাঁড়িকাঠের কাছে নিয়ে আসেন তিনি। আদেশ দেন হাঁড়িকাঠে ঢোকানোর।
কিন্তু তাতে মৃত্যু ভয়ে ভীত হন না রামপ্রসাদ। উল্টে বলেন, জীবন বা মৃত্যু সবই তো দেবীর হাতে।
তিনি কেবল শেষ ইচ্ছে জানিয়ে বলেন, তাঁকে যেন দেবীকে একটা গান শোনাতে দেওয়া হয় শেষ বারের মতো।
তাঁর সেই ইচ্ছে মঞ্জুর হয়।
মা কালীর উদ্দেশ্যে গান ধরলেন রামপ্রসাদ। গাইলেন 'তিলেক দাঁড়া ওরে শমন, বদন ভরে মাকে ডাকি।'
হাঁড়িকাঠে গলা রেখেই গান গান তিনি। তাঁর গান শেষে রঘু ডাকাত দেখেন হাঁড়িকাঠে রামপ্রসাদ সেন নয়, বরং দেবী কালী রয়েছেন।
সেই দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠেন রঘু ডাকাত। ক্ষমা চান রামপ্রসাদের থেকে।
সেই থেকে নরবলি দেওয়া বন্ধ করেন তিনি।
এ ভাবেই রঘু ডাকাতের জীবন বদলে দিয়েছিলেন রামপ্রসাদ। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)