উত্তম কুমার মেট্রো স্টেশনে নেমে বেহালা চৌরাস্তা বা ঠাকুরপুকুরের দিকে আসতে গেলেই টলি নালার ঠিক পাশেই মন্দিরটি অবস্থিত।
স্থানীয় তো বটেই, গোটা বেহালা, টালিগঞ্জ অঞ্চলের মানুষের কাছে জাগ্রত মন্দির বলেই পরিচিত এটি। টালিগঞ্জ করুণাময়ী কালী মন্দির।
কিন্তু জানেন কি এই মন্দিরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সন্তান বিয়োগের মতো এক মর্মস্পর্শী ঘটনা? কী সেই ঘটনা, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
জনশ্রুতি অনুযায়ী বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের বাসিন্দা ছিলেন নন্দদুলাল রায়চৌধুরী। তাঁর এক মাত্র কন্যা করুণাময়ী। মেয়ের অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারেন না নন্দদুলাল। শোকে পাথর হয়ে যান।
সেই সময়ই তাঁর মেয়ে করুণাময়ী তাঁকে স্বপ্নে দেখা দেন।
একটা কষ্টিপাথর দেখিয়ে জানায় সেই পাথরেই সে তার বাবার কাছে থাকবে। আদি গঙ্গা থেকে তিনি নাকি সেই কষ্টিপাথর পান।
মেয়ের স্বপ্ন পাওয়ার পর ১৭৬০ সালে আদি গঙ্গা বা টলি নালার পশ্চিম পাড়ে মন্দির তৈরি করেন নন্দদুলাল।
টালিগঞ্জের এই মন্দিরে কষ্টিপাথর দিয়ে তৈরি করা হয় কালীমূর্তি। নন্দদুলাল কালী সাধক হওয়ায় কালীমূর্তি নির্মাণ করেন।
মেয়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে যেহেতু তিনি এই মন্দির তৈরি করেছিলেন তাই প্রতিমার নাম রাখেন মা করুণাময়ী।
এই মন্দিরে তাই দেবী কন্যা রূপে পূজিত হন।
কালীপুজোর দিন এখানে আজও কুমারী পুজো হয়। প্রতিমা সেজে ওঠে বেনারসি শাড়ি, গয়না এবং ফুলের সাজে।
কালীপুজোর দিন দেবীকে নিবেদন করা হয় খিচুড়ি, পোলাও, তরকারি, লুচি, ছোলার ডাল সহ ১০ রকমের মাছের পদ। থাকে পায়েস, চাটনি, মিষ্টিও। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।