কলকাতার কালী পুজো মানেই শুধু প্রদীপের আলো আর নৈবেদ্যের গন্ধ নয়—এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে রকমারি থিম, অভিনব ভাবনা আর শিল্পকলার চোখ ধাঁধানো প্রদর্শনী।
দমদম মেট্রোর কাছেই আধিবাসীবৃন্দ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ময়দান। প্যান্ডেলের ভেতরে ঢুকলেই মনে হবে যেন ফিল্মের সেটে পা পড়েছে—চেনা করিডর, হালকা আলো, কোথাও টানটান সাসপেন্স।
এ বছর এখানকার কালী পুজোয় সাজানো হয়েছে ‘ভুলভুলাইয়া’ থিমে। ভয় আর মজার টানটান মিশেলেই দর্শক টানছে এই প্যান্ডেল।
মণ্ডপের ভিতরে পা রাখলেই গা ছমছমে অনুভূতি, যেন ঢুকছেন রাজা মশাইয়ের সেই পুরনো প্রাসাদের গোলকধাঁধায়।
চারিদিকে আলো-আঁধারির মায়াজাল, আর তারই মাঝে রাত বাড়লে শুরু হচ্ছে আসল চমক। লাইভ পারফরম্যান্সে দর্শকদের সামনে আসছে সিনেমার সেই বিখ্যাত চরিত্র 'মঞ্জুলিকা'!
অভিনেত্রীর সেই নাচ আর চোখের ইশারায় রহস্যের জাল বুনে দর্শককে অন্য জগতে নিয়ে যাওয়ার এই কৌশল ইতিমধ্যেই দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
সন্ধ্যার পর থেকে ভিড় জমাচ্ছেন অজস্র দর্শক ও ফটোগ্রাফাররা।
রসবোধের মোড়কে এই ভূতুড়ে পরিবেশের সঙ্গে মিশেছে এক মন ভোলানো মাধুর্য। এ বছর কুমারটুলি থেকে আসা যে 'কিউট কালী' প্রতিমাটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা, সেই দেবীর দর্শন মিলছে এই মণ্ডপেই।
থিমের গা ছমছমে পরিবেশের পাশে এই মিষ্টি প্রতিমার উপস্থিতি মণ্ডপটিকে একটি পারিবারিক আকর্ষণ দিয়েছে।
এক দিকে যেমন টানে থিমের ভিন্নতা, তেমনই অন্য দিকে মায়ের শান্ত রূপ দেয় ভক্তির বাঁধন।
রাতের আলোয় মঞ্জুলিকার অভিনয় দেখতে যেমন ভিড় জমান উৎসাহীরা, তেমনই পরিবারের সঙ্গে অনেকেই আসছেন কিউট কালীর দর্শন করতে।
উৎসবের এই সময়ে এই পুজো যেন কলকাতার থিম-পুজোর মানদন্ড আরও কিছুটা বাড়িয়ে দিল। সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মতে, রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার জন্য এই মণ্ডপটি এ বারের কালী পুজোয় অবশ্যই একবার ঘুরে আসা দরকার। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।