Boltala Kali

‘জয় মা কালী!’ বলেই মশালের আলোয় দেবী প্রতিমা নিয়ে শুরু হয় দৌড়! বোলতলা কালীপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে কোন কিংবদন্তি?

কাটোয়ার মুস্থূলীর প্রাচীন বোলতলা কালীপুজোয় এখনও বজায় আছে সাধকের তন্ত্রমতে পুজোর রীতি, সিদুঁর খেলা থেকে দৌড় বিসর্জন হয় সবই

Advertisement
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৫৭
Share:
০১ ১২

শারদ উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই আগমন ঘটে শক্তির আরাধনার। দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে প্রদীপের আলোয় সেজে ওঠে বাংলার আনাচ-কানাচ। আর এই সময়েই এক ভিন্ন মেজাজ দেখা যায় অবিভক্ত বর্ধমানের প্রাচীন কালীক্ষেত্রগুলিতে।

০২ ১২

পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার মুস্থূলী গ্রামে এমনই এক প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলেছে মা বোলতলা কালীপুজো। স্থানীয়দের কাছে তিনি ‘মেজঠাকরুন’ নামেই পরিচিত।

Advertisement
০৩ ১২

প্রায় তিনশো বছরের পুরোনো এই পুজো আজ শুধু মুস্থূলী নয়, আশেপাশের পাঁচ গ্রামের মানুষের প্রাণের উৎসব।

০৪ ১২

কথিত আছে, বহু বছর আগে এক সাধক এই গ্রামের এক বকুল গাছের নীচে ছোট্ট মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে কালীর আরাধনা শুরু করেন। সেই বকুলতলার কালীই পরে ‘বোলতলা কালী’ নামে প্রসিদ্ধ হন।

০৫ ১২

কালের নিয়মে ভক্তদের দানে তৈরি হয় মন্দির। সাধকের তিরোধানের পর পুজো প্রথমে সামলেছেন স্থানীয় জমিদাররা। পরে জনৈকা রানি দাস দায়িত্ব নেন। বর্তমানে তাঁর উত্তরসূরিরা চার পুরুষ ধরে এই পুজোয় যুক্ত। এখন এই পুজো বারোয়ারি, একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে গ্রামবাসীরাই ভক্তি ভরে তা পরিচালনা করেন।

০৬ ১২

প্রায় ১১ ফুট উচ্চতার এই বিশাল প্রতিমার পদতলে শায়িত থাকেন স্বয়ং শিব। দেবীর অলঙ্কার থাকে ব্যাঙ্কের লকারে, পুজোর দিন স্বর্ণ ও রৌপ্যের সেই গয়না পরে মা সেজে ওঠেন।

০৭ ১২

তন্ত্র মতে পুজো হয় রাত ১২টার পর। আর সেই পুজোয় আজও বজায় আছে বলিদানের রীতি, প্রায় ৮০ থেকে ১০০টি ছাগ বলি হয় বলে জনশ্রুতি আছে।

০৮ ১২

পুজোর মূল আকর্ষণ শুধু রাত জাগে আরাধনা নয়। এক দিকে যেমন রাতভর পুজো চলে, তেমনই অন্য দিকে দিনের বেলায় থাকে সিঁদুর খেলার আয়োজন। কালীপুজোর দিন দুপুরে বোলতলা মায়ের মন্দির প্রাঙ্গণে জড়ো হন ঘোড়ানাশ, মুস্থূলী, আমডাঙা ও একড়েলা গ্রামের গৃহবধূরা। দেবীকে পান-সুপারি-কলা দিয়ে বরণের পর চলে ‘এয়োতি বরণ’ বা ‘ঠারোগো পান’—দুই-তিন ঘণ্টা ধরে চলে এই সিঁদুর খেলা।

০৯ ১২

কিন্তু বোলতলা কালীর পুজোকে যা বিশেষ মাত্রা দিয়েছে, তা হল দেবীর বিসর্জন। এই বিসর্জন সাধারণ হাঁটা পথে হয় না।

১০ ১২

বিসর্জনের সময় মন্দিরের সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। হাজার হাজার মানুষের হাতে শুধু জ্বলে ওঠে পাটকাঠির মশাল।

১১ ১২

দেবী প্রতিমাকে কাঁধে তুলে নেন গ্রামবাসীরা। তার পরই শুরু হয় এক অবিশ্বাস্য দৌড়! দেবীকে হেঁটে নিয়ে যাওয়া যায় না—কাঁধে প্রতিমা নিয়ে ছোটাই এখানে রেওয়াজ। জয়ধ্বনি দিতে দিতে দেবী ছুটে যান পাশের গ্রাম আমডাঙায়, সেখানে বুড়ো শিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ পর্ব চলে। তার পর ফের দৌড়ে ফিরে এসে মন্দিরের পাশের পুকুরে হয় প্রতিমা বিসর্জন।

১২ ১২

প্রতিমা কাঁধে নেওয়ার জন্য মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। রাস্তার দু’ধারে উপচে পড়া ভিড় শুধু এই দৌড় আর আলো-আঁধারের দৃশ্য দেখবে বলে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement