সাধারণত দশভুজা মানেই ভাবা হয় দেবী দুর্গার কথা। কিন্তু আসানসোলের প্রগতিশীল সঙ্ঘে দেবী কালীকে দশভুজা রূপে পুজো করা হয়। চার হাতের বদলে তাঁর দশটি বাহু।
পুরাণ মতে, দেবী চণ্ডীকে দশভুজা রূপে পুজোর উল্লেখ আছে। সেই ধারণা থেকেই ১৯৯২ সাল থেকে এই পুজো শুরু হয়েছে। প্রায় তিন দশক ধরে এই পুজো তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
বছর বছর এখানে থিমের নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে আসা হয়, আর ভিড় উপচে পড়ে দূরদূরান্তের মানুষের।
আগের বছর এখানকার দশভুজা কালী প্রতিমা সেজে উঠেছিল মৎস্যকন্যার থিমে।
সেই সঙ্গে গোটা এলাকা ঝলমলে করে তোলে মন মুগ্ধকর আলোকসজ্জা। প্রতি বছর পুরুলিয়ার শিল্পী তপন কুম্ভকার বহু যত্নে দেবীর এই বিশেষ রূপটি গড়ে তোলেন।
শুধু আশপাশের অঞ্চল থেকেই নয়, ভিন রাজ্য থেকেও মানুষ আসেন এই অভিনব রূপে দেবীকে এক ঝলক দেখতে।
পুজোর পাশাপাশি উৎসবের মেজাজ আরও জমিয়ে তুলতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন থাকে। মঞ্চ আলো করে আসেন বহু লোকশিল্পী। তাঁদের গান আর নাচের ছন্দে উৎসবের পরিবেশ হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।
শুধু ভক্তি নয়, এই পুজোয় মিশে থাকে বাঙালির চিরায়ত রসবোধ, সৃজনশীলতা আর এক অকৃত্রিম আবেগ।
কালী এখানে শুধু সংহারিণী নন, তিনি এই অঞ্চলের কাছে এক নতুন উৎসবের ঠিকানা।
দশভুজা রূপে দেবী কালী যেন মনে করিয়ে দেন, ধর্ম-সংস্কৃতির সঙ্গে মিলেমিশে সমাজের আনন্দও কতটা প্রাণবন্ত হতে পারে। ( এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।