প্রতীকী চিত্র।
বছর ঘুরে আবার এল সেই সময়, যখন আলোর রোশনাই আর ভক্তির অর্ঘ্যে সেজে ওঠে কৃষ্ণনগর। আর সেখানে ১৭০তম বর্ষে পদার্পণ করা বৌবাজারের মা মহেশ্বরীর জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই এক অন্য আবেগ। এখানকার পুজোকে ঘিরে থাকা আকর্ষণ যেন শুধু উৎসবের নয়, তা এক অলৌকিক বিশ্বাসের সুতোয় বোনা।
পুজো শুরু হচ্ছে চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর। সকাল থেকেই দেবীর আরাধনা শুরু হলেও, দূর দূরান্ত থেকে মানুষের ভিড় জমে সন্ধ্যার আরতিতে। এই আরতি দেখতে ভিড় জমানো মানুষের ঢলই প্রমাণ করে দেবীর মাহাত্ম্য।
এ বারের পুজোর থিম - 'রাঙামাটির কৃষ্টি'। থিমের মাধ্যমে জঙ্গলমহলের অপূর্ব ডোকরা শিল্পকে তুলে ধরা হয়েছে। ডোকরা, বাংলার এই নিজস্ব শিল্পকলা মণ্ডপের আনাচে-কানাচে যেন এক বিশেষ ছোঁয়া দিয়েছে। শিল্প আর সংস্কৃতির এমন বুনন সত্যিই দেখার মতো।
মা মহেশ্বরী এখানকার মানুষের কাছে কেবল প্রতিমা নন, তিনি জাগ্রত দেবী। ক্লাব সদস্যদের মুখে শোনা যায় এক মর্মস্পর্শী কাহিনি। এক জন ক্লাব সদস্যের মা ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি প্রতি বছরই পুজোতে আসতেন। এক বার মাকে করজোড়ে প্রার্থনা জানান, যেন অন্তত আরও পাঁচটা বছর বেঁচে থাকার আয়ু পান। সেই ঘটনা বলতে গিয়ে আজও ক্লাব সদস্যের গায়ে কাঁটা দেয়। বিশ্বাস এবং ভালবাসার সেই ফল – মা মহেশ্বরী যেন সেই প্রার্থনা শুনেছিলেন। সেই সদস্যের মা ঠিক পাঁচ বছর দু'মাস পরেই ইহলোক ত্যাগ করেন। দেবীর এমন মহিমা আর ভক্তির গভীরতা, এই গল্পেই প্রমানিত হয়।
ইতিমধ্যে, গত ২৭ অক্টোবর কৃষ্ণনগরবাসী পরম ভক্তিভরে মাকে নানা ঐতিহ্যবাহী অলঙ্কারে সাজিয়ে তুলেছেন। এই পুজো যেন শুধু দেবীর আরাধনা নয়, তা কৃষ্ণনগরবাসীর এক আবেগ, এক ভালবাসার উদযাপন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।