Kolkata Bonedi Kali Houses History

দীপাবলির অপেক্ষায় প্রস্তুত বনেদি কালীবাড়িগুলিও, এ বার কালীপুজোয় ঘুরে আসুন সেই আলো-আবেশে

পুজো শুধু উৎসব নয়, তা সাবেক কলকাতার বুকে বয়ে চলা এক জীবন্ত ইতিহাস।

Advertisement
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:৪৯
Share:
০১ ১১

বৌবাজারের হালদার বাড়ি: মধ্য কলকাতার বৌবাজার অঞ্চলে ১৫ নম্বর রামনাথ কবিরাজ লেনের হালদার বাড়ির কালীপুজো আড়াই শতাব্দীর পুরনো। সতেরোশো শতকের মাঝামাঝি সময়ে লক্ষ্মীনারায়ণ হালদারের হাত ধরে এই পুজো শুরু হয়। তাঁদের আদি নিবাস হুগলির বাদ্লা গ্রামে।

০২ ১১

এ বাড়ির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল– পুজো শুরুর মুহূর্তে সমস্ত বৈদ্যুতিক আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। কেবল মোমবাতি আর প্রদীপের আলোয় সেজে ওঠে গোটা ঠাকুরদালান। এক মায়াবী পরিবেশ তৈরি হয় সেই রাতে।

Advertisement
০৩ ১১

পুজো শুরুর আগে এখানে অলক্ষ্মী বিদায় করার প্রথা আছে। তার পরে হয় দীপান্বিতা লক্ষ্মীপুজো। সাবেক ডাকের সাজে সেজে ওঠেন দক্ষিণাকালী। ব্রিটিশ ইস্পাত সংস্থা শেফিল্ড-এর মালিক জন ইয়েটস মুগ্ধ হয়ে যে ভারী খাঁড়া উপহার দিয়েছিলেন, তা দিয়ে এখন প্রতীকী বলি দেওয়া হয় আখ বা শশা। এই আবেগ আর নিষ্ঠা আজও ধরে রেখেছে হালদার পরিবার।

০৪ ১১

উত্তর কলকাতার বনেদি পাড়াগুলিতেও রয়েছে কালীপুজোর স্বতন্ত্র গল্প। বিডন স্ট্রিটের ছাতুবাবু–লাটুবাবু নামে পরিচিত দুই ভাইয়ের বাড়ি রামদুলাল নিবাস তার সুবিশাল নাটমন্দিরের জন্য বিখ্যাত। পারিবারিক দুর্গাপুজো এই প্রাঙ্গণেই শুরু হয় ১৭০৭ সালে। কালীপুজোকে ঘিরেও এই বাড়ির রীতিনীতি কম আকর্ষণীয় নয়।

০৫ ১১

শিমলা কাঁসারিপাড়ার প্রামাণিক বাড়ির কালীপুজো সাড়ে তিনশো থেকে চারশো বছরের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। বংশ পরম্পরায় কংসবণিক সম্প্রদায়ের এই পুজো। প্রচলিত আছে, দেবীর ইচ্ছেতেই কৃষ্ণবর্ণের এক বালিকার নূপুরের শব্দ অনুসরণ করে শুরু হয়েছিল আরাধনা। পুজোর দিনে ১০৮টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। এখানকার বিশেষ রীতি হল, দেবীকে প্রথমে ডাকের সাজে সাজিয়ে রাত গভীর হলে সোনার-রুপোর গয়না দিয়ে সাজানো হয়। আরতি হয় ধুনো পোড়ানো প্রথায়। পরিবারের সদস্যরা সায়াহ্নে সিদ্ধি গ্রহণ করেন। নৈবেদ্যের জন্য পুরোহিত প্রদান করেন কারণবারি।

০৬ ১১

পরিবারের আর এক শাখা, বরাহনগরের প্রামাণিক কালীবাড়ি, গড়ে উঠেছিল ১৮৫২ সালে। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস নাকি এখানকার ব্রহ্মময়ী কালীকেই স্নেহভরে ‘মাসি’ বলে ডাকতেন।

০৭ ১১

জোড়াসাঁকোর শিবকৃষ্ণ দাঁ পরিবারের ঠাকুরদালানেও কালী আরাধনা হয়ে আসছে ১৭৯১ থেকে ১৮০০ সালের মাঝামাঝি থেকে। তখন মশলার ব্যবসা ছেড়ে দাঁ পরিবার বারুদের ব্যবসায় উন্নতি করছিল।

০৮ ১১

গিরিশ পার্ক-শ্যামবাজার অঞ্চলের কাছে ১৫৯, বলরাম দে স্ট্রিটের শ্যামলধন দত্তের বাড়ির পুজো শুরু হয় ১৮৮২ সালের আশেপাশে, যা পরে ঘোষ বাড়ি নামে পরিচিত হয়।

০৯ ১১

নিস্তারিণী কালী মন্দির: হেদুয়া সংলগ্ন বেথুন রো-র নিস্তারিণী কালী মন্দির স্থানীয়দের কাছে ‘নানেদের কালী মন্দির’ নামেই বেশি পরিচিত। ১৮৬৫ সালে নবরত্ন শৈলীর এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র নান। কথিত, দক্ষিণেশ্বরের জন্য তৈরি করা কষ্টিপাথরের এক দেবীমূর্তি গর্ভগৃহে মাপসই না হওয়ায় এখানে স্থাপন করা হয়— সে কারণেই নাকি দেবী নিস্তারিণীকে বলা হয় ভবতারিণীর ‘বড় বোন’।

১০ ১১

আরও এক পুরনো পরিচিত নাম আঠেরো হাত কালী। মাছুয়াবাজারের মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটের মন্দিরটি দেবীর বিশাল আকারের জন্যই এমন নাম পেয়েছে। আঠেরো হাত কেবল পরিমাপ নয়, উত্তর কলকাতার বিশ্বাসের গভীরতা মাপারও প্রতীক।

১১ ১১

একই অঞ্চলের শ্রী শ্রী বসা কালী মন্দিরেরও নিজস্ব কাহিনি আছে। দেবীর উপবিষ্ট রূপ এখানকার বিশেষত্ব। স্থানীয়রা বলেন, এই দেবী নাকি পাড়ার রক্ষাকর্ত্রী— কারও অসুখ-বিপদে সবার আগে প্রার্থনা পৌঁছে যায় এখানেই। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement