মালদহ শহরের বুকে রয়েছে এক জাগ্রত মন্দির, যেখানে দেবী কালিকা মহামায়া রূপে বিরাজ করেন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, মন থেকে ডাকলে দেবী নাকি ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন।
এই মহামায়া কালীমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় আজ থেকে প্রায় পঁয়ষট্টি বছর আগে, সেই ১৯৬০ সালে।
শোনা যায়, মন্দির চত্বরে যে গাছতলাটি রয়েছে, সেখানে একদা শিবদল ভূতরা নামে এক ব্যক্তি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তখনই স্বয়ং দেবী মহামায়া তাঁকে স্বপ্নাদেশ দেন।
ওই ব্যক্তি স্বপ্নে দেখতে পান, ওই চত্বরের ঠিক নীচে পাতালে রয়েছে 'মায়ের শিলা'।
স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা মাটি খুঁড়ে সেই শিলাটি তুলে আনেন এবং ওই গাছতলাতেই স্থাপন করেন।
সেই থেকেই শুরু হয় দেবী মহামায়ার পুজো।
এই মন্দিরের প্রধান উৎসব বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহে। সে সময়ে এখানে আয়োজন করা হয় দেবীর বাৎসরিক মহাপুজো বা বড় যজ্ঞ।
এই মন্দিরে দেবীর তিনটি বিগ্রহ, যা তিন নামে পরিচিত। দেবী এখানে মহাকালী, মহালক্ষ্মী, ও মহাসরস্বতী রূপে পূজিত হন। অর্থাৎ, কালীপুজোর সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্মী আর সরস্বতীর আশীর্বাদও একই সঙ্গে পাওয়া যায় এই মন্দির প্রাঙ্গণে।
সারা বছরই ভক্তদের আনাগোনা লেগে থাকে। তবে প্রত্যেক শনি ও মঙ্গলবারে মন্দির খোলা থাকে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
বৈশাখ মাসের বাৎসরিক পুজো উপলক্ষে মন্দির চত্বর সেজে ওঠে, বসে বিরাট মেলা। উৎসবের এই দিনগুলিতে শুধু পুজো নয়, চলে সমাজসেবামূলক কার্যকলাপও।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন।
সামনেই যখন শ্যামাপুজো, তখন এই জাগ্রত দেবীর মন্দির থেকে এক বার ঘুরে আসতেই পারেন। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।