মধ্য কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় কালীপুজো এই নব রবিন সঙ্ঘের।
আলোর রোশনাই আর আন্তরিকতার ছোঁয়া নিয়ে এ বছর এই পুজো পদার্পণ করল ৬৬তম বর্ষে। তবে এর পিছনে লুকিয়ে আছে এক দীর্ঘ ইতিহাস।
১৯৭৭ সালে প্রথম শুরু হয়েছিল এই পুজো।
শুরুর দিনগুলিতে শিল্পী কালিপদ পাল তাঁর হাতেই প্রতিমা তৈরি করতেন। এখন দেবীর মুখ আঁকেন তাঁর ছেলে শিল্পী মাধব পাল।
গত ৮ অক্টোবর সম্পন্ন হয়েছে দেবীর চক্ষুদান পর্ব। এখন কেবল আর কিছু দিনের অপেক্ষা। তার পরেই আলোর মালায় সেজে উঠবে মণ্ডপ।
এক সময়ে পুজোর মাত্র পনেরো দিন আগে প্রতিমা তৈরি শুরু হলেও এখন ব্যস্ততা বেড়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিল্পীরা এখন কাজ শুরু করে দেন আরও অনেক আগে।
এই প্রস্তুতি পর্বেই যেন পুজোর গন্ধ মেখে নেয় গোটা পাড়া। এলাকার সমস্ত ছেলে এই পুজোয় সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করে, ব্যস্ত থাকে নানা দায়িত্বে।
এখানেই যেন লুকিয়ে আছে নব রবিন সঙ্ঘের আসল প্রাণ।
এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে বহু স্মরণীয় মুহূর্ত। এক সময়ে এই মণ্ডপে বহু স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বের আনাগোনা ছিল।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় যেমন এসেছিলেন, তেমনই রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের আগমনও হয়েছিল। এক বার বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র এর উদ্বোধনও করেছিলেন।
ক্লাবের সদস্যরা আজও আবেগ ধরে রাখেন, যখন মনে পড়ে ইন্দিরা গান্ধী পর্যন্ত এই পুজোর জন্য শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছিলেন। এই সব মুহূর্ত ক্লাবের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা।
তবে এই পুজোর নামের পিছনে যে আবেগ জড়িয়ে আছে, তা আজও পাড়ার মানুষের মনকে আর্দ্র করে তোলে। যাঁর নামে এই পুজোর নামকরণ, সেই 'বুঁচিয়া দা' ১৯৮০ সালে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হঠাৎই মারা যান। সেই শোকের পরেও কিন্তু পুজো বন্ধ হয়নি। বরং, তাঁর স্মৃতিকে জিইয়ে রেখে, আরও দ্বিগুণ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে এই পুজোকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন নব রবিন সঙ্ঘের সদস্যরা। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।