বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো কেবল মাত্র কোনও ঈশ্বরীর আরাধনা নয়। দশভুজাকে প্রত্যেক বাঙালিই হয় মাতৃরূপে অথবা কন্যারূপে কল্পনা করে। তাই, এই পুজো শুধুই আচার নয়, এ হল অন্তরের আবেগ! যে আবেগের অনন্য প্রকাশ ঘটেছে উত্তর কলকাতার কাশীপুরের বাসিন্দা এক শিক্ষিকার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়।
বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে বাচ্চাদের পড়ান তরুণী শিক্ষিকা সুজাতা দেবনাথ। ২০১৯ সাল থেকে নিজের বাড়িতেই দুর্গাপুজো শুরু করেন তিনি। উল্লেখ্য, সুজাতা নিজেই প্রতি বছর পুজোর আগে মায়ের মৃণ্ময়ী প্রতিমা গড়েন।
ছোটবেলা থেকে আঁকতে ভালবাসেন সুজাতা। সেই ভালবাসা থেকেই শিখেছেন মূর্তি গড়তে। যদিও এই বিষয়ে কোনও প্রথাগত শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ তাঁর নেই।
সুজাতা জানান, ছোট থেকেই কুমোরটুলিতে যাতায়াত ছিল তাঁর। মৃৎশিল্পীদের কাজ দেখতে ভাল লাগত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সেই পর্যবেক্ষণই তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছে কী ভাবে গড়তে হবে মায়ের মূর্তি!
সুজাতা যে প্রতিমা গড়েন, সেটি একচালার। সব মিলিয়ে উচ্চতা ৩ ফুট। দেবীর স্বকীয়তা তাঁর গাত্রবর্ণ বা মুখের রং। সুজাতা প্রতিমা রাঙিয়ে তোলেন সোনালী রঙে। তাঁর মতে, এই রং পিতলের মতো উজ্জ্বল, টেঁকেও অনেক বেশি।
আসলে দেবনাথ পরিবারে প্রত্যেকটি প্রতিমা শারদোৎসবের পর টানা এক বছর বাড়িতেই রেখে দেওয়া হয়। এই এক বছর মায়ের নিত্য পুজো করা হয়।
এক বছর পর আবার নতুন প্রতিমা গড়া হয়। শারদীয়ার দিনগুলিতে নতুন ও পুরোনো - দু'টি প্রতিমা পাশাপাশি রেখে পুজো করা হয়। দশমীতে নিয়ম মেনে পুরোনো প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। নতুনটি বাড়িতেই থাকে। সেটি বিসর্জন দেওয়া হয় পরের বছর।
বাড়ির এই পুজোয় কোনও ঠাকুরমশাই বা পুরোহিত ডাকা হয় না। সুজাতা ও তাঁর বাবা - বাপ-বেটির এই জুটিই সারেন যাবতীয় আচার-অনুষ্ঠান। এমনকী, ভোগ রান্নাও বাবা-মেয়ে মিলেই করেন।
পুজোর পাঁচ দিন পাঁচ ধরনের ভোগের আয়োজন করা হয়। ষষ্ঠীতে থাকে লুচি ভোগ। সপ্তমী মাছের ভোগ মাকে অর্পণ করা হয়। অষ্টমীর ভোগে থাকে পোলাও-সহ অন্যান্য নিরামিষ পদ। নবমী ও দশমীতে আবারও মাকে মাছের ভোগ দেওয়া হয়।
পুজোর দিনগুলিতে দেবনাথ পরিবারের দু'কামরার ফ্ল্যাট আত্মীয়, বন্ধুদের ভিড়ে গমগম করে। এ বারও তার কোনও ব্যতিক্রম হবে না বলেই জানালেন সুজাতা। (‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’)। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।