Chandannagar Jagadhatri Immersion 2025

'আলোর শহর' চন্দননগরে লোডশেডিং-মুক্ত শোভাযাত্রা, জগদ্ধাত্রীর বিসর্জনে জনজোয়ার!

এ বছর বিসর্জনের মূল শোভাযাত্রায় প্রায় ৭০টি পুজো কমিটি অংশগ্রহণ করে।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৫৬
Share:

প্রতীকী চিত্র।

ঐতিহ্য ও আধুনিকতার এক অনবদ্য মিশ্রণে শনিবার (১ নভেম্বর ২০২৫) হুগলির চন্দননগরে সম্পন্ন হল জগদ্ধাত্রী প্রতিমার বর্ণাঢ্য বিসর্জন শোভাযাত্রা। বিশাল আকারের প্রতিমা এবং বিশ্বখ্যাত আলোকসজ্জা দেখতে জনস্রোতে ভাসল 'আলোর শহর'। তবে, এ বছরের বিসর্জন এক বিশেষ কারণে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে — দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙে এ বারই প্রথম শোভাযাত্রার সময়ে শহরের বিদ্যুৎ সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখা হয়।

Advertisement

নয়া ইতিহাস রচনা:

এত দিনের প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, চন্দননগরে প্রতি বছরই জগদ্ধাত্রী বিসর্জনের দিন সকালে শোভাযাত্রার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হতো। এর মূল কারণ ছিল, ২০-২৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমাগুলি যখন লরিতে করে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন ওভারহেড তারের সঙ্গে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু, সম্প্রতি প্রায় ১২০ কোটি টাকা খরচ করে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ফলে ওভারহেড তারের সমস্যা মিটে গিয়েছে। যার জেরে দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ও জলের সমস্যায় ভোগা থেকে মুক্তি পেলেন চন্দননগরের সাধারণ মানুষ। সারা দিন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা বজায় থাকায় শহরবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।

Advertisement

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও জনসমুদ্র:

৭০টি বারোয়ারি পুজোর অংশগ্রহণ: চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির অধীনে থাকা প্রায় ১৮০টি পুজোর মধ্যে অন্তত ৭০টি বারোয়ারি পুজো শনিবারের মূল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।

বিশাল প্রতিমা ও আলোকসজ্জা: বিশাল উচ্চতার প্রতিমাগুলি সুসজ্জিত ট্রাকে করে গঙ্গার ঘাটের দিকে এগিয়ে চলে। সেই পথে ছিল চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা, যা চন্দননগরের অন্যতম আকর্ষণ। আলোয় ফুটিয়ে তোলা বিভিন্ন থিম ও কার্টুন চরিত্র নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের।

নিয়ম মানার কড়াকড়ি: কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ অনুযায়ী, শোভাযাত্রায় ডিজে বক্স বাজানো বা বাজি পোড়ানো সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ ছিল। পরিবেশ দূষণ রুখতে প্রতিমাগুলিতেও ব্যবহার করা হয়েছে সিসামুক্ত রং।

বিশেষ বিসর্জন পর্ব:

নিয়ম অনুযায়ী, শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ না করা প্রতিমাগুলির বিসর্জন সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে, মূল আকর্ষণ ছিল সন্ধ্যায় শুরু হওয়া ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা। গঙ্গার ঘাটগুলির মধ্যে চন্দননগরের রানিঘাটে সর্বাধিক প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

এ দিন একাধিক পুজো কমিটির প্রতিমা নিরঞ্জনের পথে রেললাইন পেরোনোর এক বিশেষ দৃশ্যও দেখা যায়। পশ্চিম পাড়ের কয়েকটি প্রতিমা রেললাইন অতিক্রম করে গঙ্গার ঘাটে আসে। যার জন্য কিছুক্ষণের জন্য ট্রেন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসন ও পুরনিগমের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও নজরদারির বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সিসিটিভি ও ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে গোটা শোভাযাত্রার উপরে নজর রাখা হয়।

এ বারের বিসর্জন পর্বের সাক্ষী থাকতে দেখা যায় টলিউড অভিনেত্রী ইধিকা পালকেও। তাঁকে ঘিরে আমজনতার উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement