কালীপুজোর এই সময় এলেই জানা যায় দেবীর বিভিন্ন রূপে কথা। কোথাও তাঁর হাত হাজার, তো কোথাও দশ, কোথাও তিনি নীলবর্ণা, কোথাও সবুজ। সেই সমস্ত পুজো জুড়ে রয়েছে কত রকমের জনশ্রুতি, গল্প। আর তেমনই একটি পুজো, মন্দির হল উত্তর কলকাতার ঘোমটা কালী।
সাধারণত কালী বলতে মুক্তকেশী রূপ চোখের সামনে ফুটে ওঠে। কিন্তু এই মন্দিরে দেবীর মাথায় ঘোমটা দেওয়া থাকে। তাই এমন নাম।
ঘোমটা কালী মন্দির অবস্থিত উত্তর কলকাতার বলরাম ঘোষ স্ট্রিটে।
শ্যামবাজারের পাঁচ মাথার মোড় থেকে ভূপেন বোস অ্যাভিনিউ ধরে মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের বিপরীতে পড়ে শ্যামবাজার স্ট্রিট। সেখান থেকে একটু এগোলেই শ্যামপুকুর থানা। আর তার সামনেই রয়েছে বলরাম ঘোষ স্ট্রিট, যেখানে রয়েছে এই ঘোমটা কালী মন্দির।
১৮৮৮ সালে তৈরি করা হয় এই মন্দির।
জনশ্রুতি অনুযায়ী বলরাম ঘোষের বংশধর তুলসীরাম ঘোষকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন দেবী।
স্বপ্নে দেখা দেবীর রূপ অনুযায়ী এই ঘোমটা কালীর মূর্তি তৈরি করা হয়।
নিত্য পুজো চলে এই মন্দিরে। তবে কার্তিক মাসের অমাবস্যায় কালীপুজোর দিনও ধুমধাম করে পূজিত হন তিনি
এ ছাড়াও বাসন্তী পঞ্চমীর দিন যেহেতু এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল তাই সে দিনও বিশেষ পুজোর আয়োজন থাকে।
সাধারণ মানুষের কাছে মন্দিরটি যতই ঘোমটা কালী নামে পরিচিত হোক না কেন সাধকদের কাছে এই মন্দিরের অধিষ্ঠিত দেবী দক্ষিণাকালীর আরেক রূপ।
কোনও কোনও সাধকের মতে এই দেবী হলেন ভবতারিণী।
এই মন্দিরে দেবীকে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় নুন ছাড়া লুচি, পাঁচ রকমের ভাজা, বোঁদে, মিষ্টি।
স্থানীয়দের বিশ্বাস বিপদে পরিত্রাতা হয়ে রক্ষা করেন ঘোমটা কালী। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)