150 Years Old Jagaddhatri Puja in Burdwan

দেড়শো বছরের ঐতিহ্য! বর্ধমানের বনেদি চট্টোপাধ্যায় বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর বিশেষত্ব কী জানেন?

প্রাচীন রীতির ধারায় দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে এই বনেদি পুজো।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৩৩
Share:

সংগৃহীত চিত্র

ভাইফোঁটার মিষ্টতার পরে বাতাসে অন্য এক আগমনীর সুর। জগদ্ধাত্রী আসছেন, শক্তির রূপ, যিনি ধারণ করে আছেন এই জগৎ। আর সেই আগমনীকে ঘিরেই পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের কালীতলা পাড়ায় চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে এখন উৎসবের মেজাজ। এ বাড়িতে আনন্দ-উচ্ছ্বাস যেন নতুন নয়, দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে পারিবারিক রীতি আর ষোড়শ উপাচার মেনে দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা হয়ে আসছে।

Advertisement

এ বাড়ির পুজো শুধুমাত্র একটি পারিবারিক প্রথা নয়, তা যেন গোটা গ্রামকে এক সঙ্গে মাতোয়ারা করে তোলে। এই বনেদি পরিবারের সদস্যরা কর্মসূত্রে ছড়িয়ে থাকেন কলকাতা বা দেশের নানা প্রান্তে— কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল, কেউ বা সরকারি উচ্চপদে। কিন্তু মায়ের ডাক আর শিকড়ের টান উপেক্ষা করা যায় না। পুজোর ক’টা দিন সকলে এক সঙ্গে ফিরে আসেন পৈতৃক ভিটেয়, পুরনো বাড়িতে। সাবেক বাড়ির এক পাশে রয়েছে দেবীর মন্দির। যেখানে চোখ রাখা যায়, সেখানেই চোখে পড়ে কারুকার্যের ছোঁয়া, যা বাড়ির ঐতিহ্যেরই ধারক। ভক্তি আর শ্রদ্ধার বিন্দুমাত্র অভাব থাকে না পরিবারের কারওরই।

দেবী জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা এখানে এক চালার কাঠামোয় ত্রিনয়নী রূপে বিরাজমান। কিন্তু বিশেষত্ব হল, এই প্রতিমার দু'পাশে দেখা যায় মহাভারতের রচয়িতা ব্যাসদেব এবং অপর পাশে নারদ মুনিকে। জানা যায়, পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী ব্যাসদেব ও নারদ মুনি হলেন দেবী জগদ্ধাত্রীর সেবক। এমনকী জগদ্ধাত্রী পুজোর মন্ত্রেও নাকি তাঁদের নাম উল্লেখ করা আছে। এই কারণেই দেবীর পাশে সেবক হিসেবে তাঁদের স্থান দেওয়া হয়।

Advertisement

পরিবারের বর্তমান কর্তা ও তাঁর ছেলে বংশপরম্পরায় নিষ্ঠা ভরে এই পুজোর ভার কাঁধে তুলে নিয়েছেন। এই পুজো শুরুর ইতিহাস সেভাবে লিখিত না থাকলেও, পূর্বপুরুষদের বেঁধে দেওয়া রীতি আজও অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়। আগে নবমীর দিনে ছাগ বলির রেওয়াজ থাকলেও এখন তার বদলে ছাঁচি কুমড়ো বলি দেওয়া হয়। নবমীর দিন মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তরা এক সঙ্গে ভোগ গ্রহণ করেন। এলাকার প্রতিটি মানুষই চট্টোপাধ্যায় বাড়ির এই পুজোয় সামিল হন। এর পর দশমীর পুজো সাঙ্গ হলে আরাধ্য দেবীর প্রতিমা বিসর্জন হয় কাছেই দামোদর নদে। দেড়শো বছরের ও বেশী এই ঐতিহ্য আজও জামালপুরের কালীতলাকে আলোয় ভরিয়ে রেখেছে।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement