চারিদিকে ঘন জঙ্গল। তার গভীরেই অধিষ্ঠিত দেবী। সেই সময়ে যাঁর দর্শন পাওয়া হল আসলেই দুর্লভ বিষয়। সেই থেকেই নাম…
বর্ধমানের লাকুড্ডি এলাকায় এই মন্দির পরিচিত হয় ‘দুর্লভা কালীবাড়ি’ নামে। দেবীও পরিচিতি পান ‘দুর্লভা কালী’ নামে।
কথিত, একদা গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক পরিব্রাজক ঘুরতে ঘুরতে এই জঙ্গলে ঘেরা লাকুড্ডি এলাকায় এসে পৌছঁন। সেখানেই শুরু করেন কালীর সাধনা।
সেই সময়ে ওই এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হত বেহুলা নদী। সেই নদীতে স্নান করতে গিয়ে গোকুলানন্দের পায়ে একটি পাথর ঠেকে। তিনি সেটিকে তুলেও নিয়ে আসেন।
এর পর দেবী তাঁকে ধরা দেন স্বপ্নে। নির্দেশ দেন তাঁর প্রতিষ্ঠা করার। সেই থেকেই শুরু…
প্রথমে তাল পাতার ছাউনি দিয়ে ওই পাথরটির সাধনা শুরু করেছিলেন গোকুলানন্দ। সেই সাধনার খবর গিয়ে পৌছঁয় বর্ধমানের রাজা বিজয়চাঁদ মহতাবের কাছেও।
তিনি জঙ্গলে গিয়ে গোকুলানন্দকে তিথি জিজ্ঞেস করতেই তিনি উত্তরে বলেন, “আজ পূর্ণিমা”। আসলে সে দিন ছিল অমাবস্যার রাত।
বলা হয়, ওই অমাবস্যাতেই নাকি মহারাজ বিজয়চাঁদকে পূর্ণিমার চাঁদ দেখিয়েছিলেন সন্ন্যাসী গোকুলানন্দ।
তাঁর এমন অলৌকিক ক্ষমতায় মুগ্ধ হয়ে মহারাজা তাঁকে মন্দির তৈরির জন্য জমি দান করেন। সেখানেই গড়ে ওঠে দেবী দুর্লভার মন্দির ও বিগ্রহ।
সেই মন্দিরেই রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন। যেখানে বসে আমৃত্যু সাধনা করেছেন ব্রহ্মচারী। বর্তমানে মন্দিরের পিছনেই রয়েছে তাঁর সমাধি।
আজও নির্দিষ্ট নিয়ম নীতি মেনেই পুজো হয় দেবীর। মহাকালের উপরে পদ্মফুল। তাঁর উপরে দেবী দুর্লভা। দেবীকে এখানে পুজো করা হয় তন্ত্রমতে।
বলা হয়, বিশেষ পুজোর দিনে ভোগে দেওয়া হয় শোল মাছ পোড়া। এ ছাড়া প্রতি রাতে শিয়ালকেও নিবেদন করা হয় দেবীর ভোগ। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।