জমিদার বাড়ির সঙ্গে কেবল দুর্গাপুজোই নয়, জড়িয়ে আছে বহু কালীপুজোর ইতিহাসও। আজও কিছু কিছু জায়গার নিভৃতে থাকা বনেদি বাড়িগুলি সাড়ম্বরে সেজে ওঠে কালীর আরাধনায়।
এই যেমন মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম থানার এড়োয়ালী গ্রামের রায়চৌধুরী পরিবার। বলা হয়, একটি নয়, দু’টি নয়, মোট ১৩টি কালীপুজো হয় এখানে।
আর এই পুজোগুলির মধ্যে বড় কালী, নিমকালী, মঠকালী, চাতর কালী, বেলকালী, রক্ষাকালীকে অত্যন্ত জাগ্রত বলে মনে করেন এলাকাবাসীরা।
তবে এই পুজো রায়চৌধুরী পরিবারে ঠিক কত বছর আগে শুরু হয়েছিল, তা সঠিক জানা যায় না। কিন্তু জনশ্রুতি অনুযায়ী, প্রায় ৪০০ বছর আগে রাজা রামজীবন রায়ের হাত ধরেই নাকি প্রথম বার এই গ্রামে কালীপুজোর সূচনা হয়।
কথিত, সেই সময়ে বর্গী আন্দোলনের সময়ে গ্রামের মানুষদের মঙ্গল কামনার জন্যেই এই পুজো শুরু করেন তিনি।
এখনও নিষ্ঠা ভরে চলে আসছে সেই পুজো।
দেবীর আরাধনায় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অংশ নেন সকলে।
এর নেপথ্যেও রয়েছে এক বড় ইতিহাস।
জনশ্রুতি আছে, কয়েকশো বছর আগে এলাকার ডাকাতরা অভিযানে যাওয়ার আগে যে কালী মূর্তির পুজো করতেন, তাঁকেই ধর্মবুড়ি নামে পুজো করা শুরু করেন রাজা রামজীবন।
এই পুজোয় নাকি স্বয়ং বামাক্ষ্যাপা এসে তাঁদের পারিবারিক মন্দিরে পুজো করেছেন।
তথ্য বলছে, এই বাড়ির কালীপুজোয় বেশ কিছু অভিনবত্ব রয়েছে।
এখনও মেষ এবং মোষ বলিদান হয় এখানে।
দেবীর ঘটে ঢালা হয় জলের পরিবর্তে ‘কারণবারি’।
এ ছাড়াও দেবীকে পুজোয় সময়ে মৃতের খুলি করে পান করানো হয় ‘কারণ’।
পুজোর শোভাযাত্রাতেও রয়েছে চমক। নিরঞ্জনের দিন সমস্ত প্রতিমাগুলি এক সঙ্গে বের হয় শোভাযাত্রার জন্য। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)