কালীপুজো মানেই আলোয় আলো হয়ে ওঠা শহর। পুজোর গন্ধ এখন বাতাসে। রাস্তা, বারান্দা, ছাদ— কোথাও যেন অন্ধকারের জায়গা নেই। বাজারে ভিড় এখন বাতি কেনাকাটায়।
এজ়রা স্ট্রিটে তো এখন দাঁড়িয়ে থাকাই মুশকিল। কলকাতার এই পুরনো আলোর ঠিকানাতেই দীপাবলির আগে জ্বলে উঠেছে টুনি লাইট, ফেয়ারি লাইট, ঝালর, পদ্মফুল বাতি, এমনকী লণ্ঠনেরও মেলা।
প্রায় আড়াই হাজার দোকান সাজানো এই লাইট স্ট্রিটে ক্রিস্টাল ঝাড়বাতি থেকে শুরু করে এলইডি প্রদীপ, সবই মিলবে।
দাম ৪০০ থেকে শুরু করে ২৫০০ টাকার মধ্যে, নকশা যত অভিনব দামও তত বেশি।
গড়িয়াহাটের ফুটপাতেও ভিড় সামলাতে হিমশিম। উটের পিঠে নকশা করা প্রদীপ, শঙ্খ আকৃতির মোমদানিতে জ্বলে উঠছে রঙিন আলো।
এলইডি বসানো লণ্ঠন, ভাসমান মোমবাতি, তারাবাতি— সব মিলিয়ে দক্ষিণ কলকাতার রাস্তায় এখন একে বারে উৎসবের ছোঁয়া।
অন্য দিকে হাতিবাগান বাজার, শ্যামবাজার মোড় থেকে হাতিবাগানের দিকে বিস্তৃত। রাস্তার দু’ধারে সারি সারি দোকান সাজানো থাকে দীপাবলির বাতির পসরা নিয়ে।
এখানে মূলত মাটির প্রদীপ, মোমবাতি এবং এলইডি প্রদীপ পাওয়া যায়। ছোট মাটির প্রদীপ ৫০ টাকা থেকে শুরু, বড় ও কারুকাজ করা প্রদীপের দাম আরও বেশি। এলইডি আলো দেওয়া মোমবাতি, ছোট টুনি লাইট এবং লণ্ঠনও এখানে পাওয়া যায়।
চাঁদনি বাজার মেট্রোর আশেপাশে ঘিরে আছে এবং এখানে ইলেকট্রনিক ও এলইডি আলোর ঘন ঘন মিলন হয়।
বিভিন্ন ধরনের ফেস্টিভ্যাল লাইট, টুনি স্ট্রিং, ফেয়ারি লাইট, ডিস্কো লাইট সবই এই বাজারে পাওয়া যায়। চাঁদনিতে মূলত হোলসেল এবং রিটেইল দুটোই রয়েছে।
ক্যানিং স্ট্রিট মূলত বড়বাজারের কাছাকাছি এলাকা। এখানে এলইডি, ঝাড়বাতি, ব্র্যাকেট এবং ফোকাস লাইটের হোলসেল দামে পাওয়া যায়।
তপসিয়ার ফুটপাতের দোকানগুলোতে আলোর বৈচিত্র্যময় পসরা সাজানো থাকে। এখানে লণ্ঠন, তারাবাতি, এলইডি প্রদীপ, ফেয়ারী লাইট এবং বিভিন্ন আকারের মোমবাতি পাওয়া যায়।
গড়িয়াহাটে তারা, চাঁদ ও বিভিন্ন নকশার আলো বসানো লম্বা ফিতে, শঙ্খ আকৃতির প্রদীপ, উট বা হাতির পিঠে নকশা করা প্রদীপ কিংবা পুঁতি বসানো ভাসমান মোমদানিও নজর কাড়ছে ক্রেতাদের।
রবীন্দ্র সরণি ও টেরিট্টি বাজারের কাছাকাছি এলাকাটি ফ্যান্সি এবং ডেকোরেটিভ লাইট বিক্রেতাদের জন্য পরিচিত। এখানে কিছু পাইকারি বিক্রেতাও আছেন, যাঁরা তুলনামূলক ভাবে নতুন নকশার ঝাড়বাতি, ব্র্যাকেট লাইট এবং অন্যান্য আধুনিক আলোকসজ্জার সামগ্রী রাখেন।
এই বাজারগুলির প্রতিটিই উৎসবের আগে কলকাতার আলোর চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি শুধুমাত্র পাইকারি দরে বা বেশি পরিমাণে আলো কিনতে চান, তবে এজ়রা স্ট্রিট, চাঁদনি চক, হাওড়া হাট এবং পোস্তা সংলগ্ন এলাকাগুলি সবথেকে সুবিধাজনক। আর সাধারণ খুচরো কেনাকাটা ও বিভিন্ন ডিজাইন দেখতে চাইলে গড়িয়াহাট, হাতিবাগান বা নিউ মার্কেট-এ ঢুঁ মারতে পারেন। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)