শারদীয়ার ছুটিতে ট্রেন ধরার মজাই আলাদা। ট্রেনের চাকার সেই শব্দ, কামরার মধ্যে ভেসে আসা গরম চায়ের গন্ধ, আর কামরায় বসে সহযাত্রীদের সঙ্গে নানান গল্প। এ সবই যেন গল্পের এক বিশাল ভান্ডার। তবে এই পুজোয় যদি সমুদ্র বা পাহাড় থেকে ঘুরে আসা যায়, তবে সেটা মন্দ হয় না। কলকাতার পুজোর রমরমা থেকে একটু দূরে ট্রেনে চেপে ঘুরতে যাবেন ভাবছেন? তবে এই টিপ্সগুলি রেলপথের জাদু আরও দ্বিগুণ করতে পারে।
১. হালকা ব্যাগ, ভরসা বাড়তি আরামেই অতিরিক্ত মালপত্র টেনে নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। ছোট ট্রলি বা ব্যাকপ্যাক, সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাপড় থাকলেই যাত্রা হবে নিশ্চিন্ত।
২. প্ল্যাটফর্মের খাবার মানেই আলাদা স্বাদ ভ্রমণের মজা চা-চপে। রতলামের পকোড়া হোক বা বাংলার রসগোল্লা—স্টেশনের খাবারেই লুকিয়ে থাকে ট্রেন সফরের আসল স্বাদ।
৩. জানলার সিটই যেন সিনেমা হল সবুজ মাঠ, গ্রামের খেলা, কিংবা হাত নাড়তে থাকা শিশু—জানলার বাইরের দৃশ্যই যেন রেলের সিনেমা। বুকিংয়ের সময় জানলার ধারের সিট নিতে ভুলবেন না।
৪. মোবাইল নয়, ট্র্যাকের শব্দই সুরেলা প্লেলিস্ট গান, ওটিটিতে ভরসা রাখতেই পারেন, তবে এক বার হেডফোন খুলে ট্র্যাকের ছন্দ শুনুন। নিঃশব্দতারও নিজস্ব গল্প আছে।
৫. সহযাত্রী মানেই নতুন চরিত্র স্ন্যাক্স ভাগাভাগি, গল্পের আদান-প্রদান, হঠাৎ পাওয়া বন্ধুত্ব—ট্রেনে অপরিচিতরাও হয়ে ওঠেন সঙ্গী।
৬. আরামদায়ক পোশাক, বুদ্ধিমান ভ্রমণ সুতির জামা, হালকা চটি, সঙ্গে একটা হালকা জ্যাকেট—যাত্রাপথে স্টাইল নয়, স্মার্টনেসই বড়।
৭. ছোটখাটো জরুরি কিট সঙ্গে রাখুন স্যানিটাইজার, ভেজা টিস্যু, ওষুধ—এই সামান্য জিনিসেই হবে অনেক সমস্যার সমাধান।
৮. এক দিন স্লিপার ক্লাসে চড়েই দেখুন এসি-র আরাম ভাল, তবে স্লিপারের হইচই, হকারদের চিৎকার—“চা-চা” ডাক—এ সবেই লুকিয়ে থাকে আসল রেল নস্ট্যালজিয়া।
৯. ছবি তুলুন, তবে মুহূর্তটাও বাঁচান মেঘলা বিকেল, ছোট্ট প্ল্যাটফর্মে চায়ের কাপের ভাপ—সবটাই ক্যামেরায় আটকানো যায় না, কিছু রাখুন শুধু মনে।
১০. ধীর যাত্রার আস্বাদ নিন ট্রেন শেখায়—সব কিছু দৌড়ে পেতে হয় না। স্টেশনের হাওয়া, ট্রেনের দুলুনি, কিংবা রাতের আকাশ—সবই ধীরে সুস্থে উপভোগের জিনিস।
রেলপথে এই যাত্রাই পুজোর আসল ছুটি। কখনও ভাপ ওঠা চায়ের কাপে, কখনও জানলা দিয়ে হাওয়া খাওয়ার আনন্দে। প্রতিটি স্টেশনেই গল্প জমে থাকে, আর প্রতিটি যাত্রাই হয়ে ওঠে এক একটি উৎসব। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)