দুর্গাপুজোর ছুটিতে যাঁরা ভিড় এবং কোলাহল থেকে দূরে শান্ত পরিবেশে ছুটি কাটাতে চান, তাঁদের জন্য একটি চমৎকার গন্তব্য হতে পারে ময়ূরভঞ্জ জেলার বাংরিপোসি। সবুজ পাহাড়, ঘন বন এবং আদিবাসী সংস্কৃতির ছোঁয়ায় এই স্থানটি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। কী ভাবে সেখানে যাবেন, কোথায় থাকবেন এবং কী কী দেখবেন– তার একটি সবিস্তার পরিকল্পনা করে নিন।
কী ভাবে যাবেন? কলকাতা থেকে বাংরিপোসি পৌঁছনো খুবই সহজ। ট্রেনে: হাওড়া স্টেশন থেকে বাংরিপোসি যেতে সবচেয়ে ভাল উপায় হল ট্রেন। হাওড়া থেকে ময়ূরভঞ্জ জেলায় বারিপদা বা বালেশ্বর স্টেশনে নামতে পারেন। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে বাংরিপোসি পৌঁছতে পারেন। বারিপদা থেকে বাংরিপোসির দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার এবং বালেশ্বর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
সড়কপথে: সড়কপথে কলকাতা থেকে বাংরিপোসি যাওয়া খুবই সুবিধাজনক। কলকাতা থেকে প্রায় ২২০ কিলোমিটার দূরত্বে এই জায়গাটিতে পৌঁছতে ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগে। বালেশ্বর হয়ে জাতীয় সড়ক ৬ (NH-6) ধরে গেলে সহজেই সেখানে পৌঁছে যাবেন। কোথায় থাকবেন? বাংরিপোসি একটি ছোট পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় এখানে থাকার জন্য খুব বেশি বিলাসবহুল হোটেল নেই। তবে কিছু ভাল মানের রিসর্ট এবং হোমস্টে আছে।
ওড়িশা ট্যুরিজম বাংলো: এখানকার একটি জনপ্রিয় থাকার জায়গা হল ওড়িশা পর্যটন বিভাগের বাংলো। এখানে আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে।
রিসর্ট: এ ছাড়া কয়েকটি ছোট-বড় রিসর্ট রয়েছে, যেখানে আপনি আরামে থাকতে পারবেন। এই জায়গাগুলি আগে থেকে বুক করে রাখা ভাল, কারণ পুজোর সময় অনেক পর্যটক ভিড় করেন।
কী কী দেখবেন? বাংরিপোসি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং আদিবাসী সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। এখানে ঘোরার জন্য কিছু বিশেষ জায়গা রয়েছে: সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান: বাংরিপোসির কাছেই অবস্থিত সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান ও ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র। এখানে বেঙ্গল টাইগার, হাতি এবং বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী ও পাখির দেখা পাওয়া যায়। জিপসি বা গাড়িতে জঙ্গল সাফারিতে গেলে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হবে।
লুলুং নদী: বাংরিপোসির পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে লুলুং নদী। এই নদীর শান্ত পরিবেশ আপনার মনকে মুগ্ধ করবে। এখানে নদীর পাশে বসে বা হেঁটে শান্তিতে সময় কাটাতে পারেন।
দেওকুণ্ড: বাংরিপোসি থেকে দেওকুণ্ডের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। এখানে একটি পুরনো মন্দির আছে এবং জলপ্রপাতের দৃশ্য খুবই মনোরম।
কায়রাকাট এবং কুলিয়ানা: এই গ্রামগুলি তার আদিবাসী সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। এখানে গেলে তাঁদের জীবনযাত্রা এবং ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প দেখতে পাবেন।
পুজোর ছুটিতে বাংরিপোসি আপনাকে শহুরে জীবনের ভিড় থেকে দূরে প্রকৃতির কোলে এক অসাধারণ ছুটি উপহার দেবে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।