দুর্গাপুজোয় কলকাতা ও তার আশপাশের ভিড় এড়িয়ে প্রকৃতির মাঝে নিরিবিলি ছুটি কাটানোর সাধ? তা হলে জঙ্গলমহল হতে পারে আপনার জন্য দারুণ ঠিকানা। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার কিছু অংশ নিয়ে গড়া এই অঞ্চলটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অরণ্য এবং আদিবাসীদের পুজোর জন্য পরিচিত। এখানে পুজোর সময়ে গেলে আপনি যে শুধু প্রকৃতির কাছে যেতে পারবেন, তা নয়। বরং সেখানকার মানুষের সহজ জীবনযাপন এবং তাঁদের সংস্কৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখতে পাবেন।
কী ভাবে যাবেন? জঙ্গলমহলে যাওয়ার জন্য সড়কপথ এবং রেলপথ– উভয় মাধ্যমই খুব ভাল। সড়কপথে: কলকাতা থেকে সড়কপথে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া যায়। ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর বা পুরুলিয়ার মতো শহরে বাসে বা গাড়িতে করে যাওয়া সম্ভব। এই রুটে রাস্তা বেশ ভাল।
রেলপথে: হাওড়া থেকে ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়ার দিকে নিয়মিত ট্রেন চলে। পুজোর সময়ে ট্রেনের টিকিট আগে থেকে বুক করে নেওয়া উচিত।
কোথায় থাকবেন? জঙ্গলমহলে থাকার জন্য এখন অনেক বিকল্প রয়েছে। আপনার বাজেট এবং সুবিধা অনুযায়ী আপনি হোটেল, রিসর্ট অথবা ইকো-ট্যুরিজম কটেজ বেছে নিতে পারেন। ঝাড়গ্রামে: এখানে থাকার জন্য অনেক ভাল মানের হোটেল এবং রিসর্ট আছে। যেমন, অরণ্যসুন্দরী, ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি, ইত্যাদি।
পুরুলিয়ায়: পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে থাকার অনেক ছোট ছোট হোটেল এবং ইকো-ট্যুরিজম কটেজ আছে। এখানে থাকলে আপনি পাহাড় এবং বনের কাছাকাছি থাকতে পারবেন।
বাঁকুড়ায়: বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর বা বিষ্ণুপুরে অনেক রিসর্ট এবং হোটেল রয়েছে। পুজোর সময়ে কী কী দেখবেন? জঙ্গলমহলের পুজো মানে শুধু প্রতিমা দেখা নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা।
আদিবাসী পুজো: জঙ্গলমহলের অনেক আদিবাসী গ্রামে দুর্গাপুজো হয়। এখানকার পুজোয় কোনও জাঁকজমক না থাকলেও, তাঁদের ঐতিহ্যপূর্ণ নাচ-গান পুজোর পরিবেশকে এক অন্য মাত্রা দেয়। এই সময়ে আপনি তাঁদের সংস্কৃতি এবং জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
রাজবাড়ির পুজো: ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির পুজো খুবই পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী। এখানে দুর্গাপুজো উপভোগ করার পাশাপাশি আপনি রাজবাড়ির স্থাপত্যও দেখতে পারবেন।
প্রকৃতি দর্শন: পুজোর দিনে ঠাকুর দেখার ফাঁকে জঙ্গলে ট্রেকিং করতে পারেন। ঝাড়গ্রামের ডিয়ার পার্ক, বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধার বা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের মতো জায়গায় গেলে আপনি প্রকৃতির মাঝে এক শান্ত সময় কাটাতে পারেন।
এই পুজোয় অরণ্যেই কাটুক না দিনরাত্রি। প্রকৃতির কোলে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা থাকবে আপনারই অপেক্ষায়। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।